নানা অনিয়মে অভিযুক্ত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কুমিল্লা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক রফিকুল ইসলাম। তাকে নিয়ে গত ২৬ মে ‘সেই রফিক এখন কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত ডিডি’ শিরোনামে দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর নানা অভিযোগে তাকে বরখাস্ত করার ফাইল নড়াচড়া শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। আর রফিকের ঘনিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ‘ঝামেলা’ এড়াতে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা তার কন্যার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ছুটি চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব বরাবর আবেদন করছেন রফিক। অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মাধ্যমে করা আবেদনটি এখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন মিললেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে উড়াল দেবেন। এবং কখনো দেশ ফিরবেন এমন পরিকল্পনা নেই বলে একাধিক ঘনিষ্ঠতা সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে রফিকের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করার সুনিদিষ্ট প্রস্তাব মাউশি অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
রফিককে নিয়ে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির মন্তব্য, ‘জেলা শিক্ষা অফিসার, ময়মনসিংহ, রফিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োগে অতি উৎসাহী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ময়মনসিংহ জেলায় শিক্ষা অফিসার পদে তিন বছরের অধিক কর্মরত আছেন এবং জনসম্পৃক্ততা অতি মাত্রায়। ফলে, জনস্বার্থে তাকে অন্যত্র বদলি করা সমীচীন বলে তদন্ত কর্মকর্তারা দৃঢ়ভাবে মনে করে।’
ওই প্রতিবেদনের পর রফিক আরো চার বছর ময়মনসিংহেই স্বপদে বহাল ছিলেন। এখন ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ। সেই রফিকুল ইসলাম এখন কুমিল্লার জেলা শিক্ষা অফিসার। একই সঙ্গে উপপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বে।
আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে মন্ত্রণালয় রফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করার সুনির্দিষ্ট ধারা উল্লেখসহ প্রস্তাব পাঠাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে।। এ ছাড়াও রফিকুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করার অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিররণী পাঠাতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু অধিদপ্তরের সরকারি মাধ্যমিক শাখার সিন্ডিকেটের কবলে ফাইল চাপা ছিলো মে মাস অবধি। দৈনিক আমাদের বার্তায় প্রতিবেদন প্রকাশের পর সেই নড়চড় শুরু হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে ময়মনসিংহের জেলা শিক্ষা অফিসার থাকাকালে নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত হন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া তথ্যমতে, ত্রিশাল উপজেলার কাটাখালী উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ওঠা অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে।
ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রফিকুল ইসলামের অপরাপর সঙ্গীরা ছিলেন- তৎকালীন ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন।
জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ত্রিশাল উপজেলার কাটাখালী উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্তে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের অধ্যক্ষকে আহ্বায়ক করে দুই সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।