তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ সবসময়ই যুদ্ধ ও হত্যাকাণ্ডের বিপক্ষে। যুদ্ধের নামে ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা কখনও সমীচীন নয়। এটি যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কনভেনশনেরও পরিপন্থি।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু সংকলন’ ও ‘সুন্দরবনের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের সমাজ ও সংস্কৃতি’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মুন্সী জালাল উদ্দিন ও অর্জন প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী আবু হাশেম মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর যেখানেই হোক, বাংলাদেশ সংঘাতের বিপক্ষে। আমরা সংঘাতময় পৃথিবী চাই না। আমরা শান্তি চাই। ফিলিস্তিন অঞ্চলে বহু বছর ধরে সংঘাত চলছে এবং ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জাতিসংঘের বক্তৃতায় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমাদের সরকার সবসময় ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে এবং অনেক সময় আমরা তাদের সাহায্য-সহযোগিতাও করেছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিন বা ইসরাইল যেখানেই যুদ্ধ হোক, সাধারণ মানুষের হত্যাকাণ্ড আমরা সমর্থন করি না। যুদ্ধের নামে গাজায় খাদ্য, পানিসহ সবকিছুর সরবরাহ বন্ধ করে ফিলিস্তিনিদের যেভাবে জিম্মি করা হয়েছে, সেটি কখনও সমর্থনযোগ্য নয়। এটি যুদ্ধ সংক্রান্ত যে আন্তর্জাতিক কনভেনশন আছে, সেটির পরিপন্থি।’
বিএনপি সম্প্রতি তাদের কয়েকজন নেতার বিচারে সাজা হওয়ায় আদালতের রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলেছেন, এ নিয়ে এক প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশে আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করে, ফরমায়েশি রায় দেয় না। বিএনপির নেতারা যদি নিম্ন আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট না হন, তাহলে উচ্চ আদালতে যেতে পারেন। আরও দুই স্তর উচ্চ আদালত আছে।
দেশ-আদালত কোনোটির ওপরই বিএনপির আস্থা নেই উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়ার মামলায় ১০০ বারের বেশি তারিখ পেছাতে হয়েছে। সে জন্যই তারা এগুলো বলে। দেশে আইন ও আদালত স্বাধীনভাবেই কাজ করে। সে কারণে আওয়ামী লীগ নেতারও বিচার হয়, শাস্তিও হয়।
বেগম জিয়া এত অসুস্থ যে বাসায়ও যেতে পারবেন না, বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের মেডিকেল বোর্ডের এমন মতামতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ বাসায় যাওয়ারও যদি ক্ষমতা না রাখেন, তাহলে বিদেশ যাবেন কীভাবে? আসলে এটি দলীয় মেডিকেল বোর্ড। তারা বিএনপির মতোই কথা বলছে। বেগম জিয়া যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান, সে জন্য সরকার আন্তরিক এবং যত ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সেটি করছে এবং প্রয়োজনে আরও করবে। বাইরের ডাক্তার আনার প্রয়োজন পড়লে তা-ও তারা আনতে পারেন। আমি মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করি, আগের মতো এবারও বেগম জিয়া দ্রুত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যান।’
পদ্মা সেতুর ওপর রেলপথ উদ্বোধন নিয়ে বিএনপির বিরূপ মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা যেমন লজ্জা ভেঙে শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে উঠেছিল, এবারও তাদের ট্রেনে করে পদ্মা সেতু পার হয়ে ফরিদপুর যাওয়ার আহ্বান জানাই।’
এর আগে তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা রচিত প্রবন্ধসহ সাহিত্যিক সন্তোষ রায় সম্পাদিত ৩০টি প্রবন্ধসমৃদ্ধ ‘বঙ্গবন্ধু সংকলন’ এবং ড. প্রণব কুমার রায়ের গবেষণাগ্রন্থ ‘সুন্দরবনের পেশাজীবী সম্প্রদায়ের সমাজ ও সংস্কৃতি’ বই দুটির প্রশংসা করেন এবং গ্রন্থকার ও প্রকাশকদের ধন্যবাদ জানান।
