অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া খুবই সহজ। ঘরে বসেই অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন, রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার ও কর সনদ সংগ্রহ করতে পারবেন, ই-পেমেন্টও করতে পারবেন। আবার ই-রিটার্ন সিস্টেম থেকে অফলাইন অর্থাৎ রিটার্ন পেপারও বানিয়ে নিতে পারবেন।
যা দরকার
টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর, বেতন বিবরণী, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, জীবনযাপন খরচ, সঞ্চয়পত্রের প্রত্যয়নপত্র (যদি থাকে), অন্যান্য আয়-ব্যয়ের তথ্য।
রেজিস্ট্রেশন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য প্রথমেই ই-রিটার্ন ওয়েবসাইটে https://etaxnbr.gov.bd/ প্রবেশ করতে হবে। এবার ই-রিটার্ন বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ডান পাশের সাইডবারের সবার নিচে থাকা রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এবার আপনার টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও ক্যাপচা সঠিকভাবে দিয়ে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করতে হবে। আপনার দেওয়া ফোন নম্বরে যে ছয় অক্ষরের ওটিপি কোড যাবে সেটি এবার বসিয়ে একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে দিন। নতুন পাসওয়ার্ডটি আবার দিয়ে সাবমিট করুন।
পাসওয়ার্ড অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার একটি ই-রিটার্ন অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।
সাইন ইন
রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে সাইন ইন করতে হবে। সাইন ইন করার জন্য ই-রিটার্ন পেজে যেতে হবে কিংবা সরাসরি এখানে ক্লিক করেও যেতে পারবেন। সাইন ইন পেজে আপনার টিন নম্বর, পাসওয়ার্ড ও ক্যাপচা দিয়ে সাইন ইন করতে হবে। আপনাকে ই-রিটার্নের ড্যাশবোর্ডে নিয়ে যাবে। এখানে ই-টিনের যাবতীয় তথ্য, রিটার্ন সাবমিশন ও ট্যাক্স রেকর্ডের সকল তথ্য পাবেন।
রিটার্ন সাবমিশন
ই-রিটার্ন ড্যাশবোর্ডের রিটার্ন সাবমিশন অপশনের ভেতর দুটি রিটার্ন পেজ পাবেন। সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন ও ডিটেইল রিটার্ন।
বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, বার্ষিক করযোগ্য আয় পাঁচ লাখ টাকার কম হলেই এক পাতার আয়কর বিবরণী জমা দিলেই হবে। এ ছাড়া সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকার কম হতে হবে, এমন শর্তও রয়েছে। আর বেশি থাকলে ডিটেইল রিটার্ন।
সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন
সিঙ্গেল পেজ রিটার্ন অপশনে ক্লিক করলে একটি পপ আপ আসবে। সেখানে এক পাতার রিটার্ন পূরণের শর্তাবলীগুলোতে টিক দিতে হবে।
যেমন- করযোগ্য আয় অনূর্ধ্ব ৫,০০,০০০ (পাঁচ লক্ষ) টাকা; মোট পরিসম্পদ অনূর্ধ্ব ৪০,০০,০০০ (চল্লিশ লক্ষ) টাকা; গণকর্মচারী নন; মোটরযানের মালিক নন; সিটি কর্পোরেশনে গৃহ সম্পত্তির মালিক নন; বিদেশে পরিসম্পদের মালিক নন; কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নন। এরপর আয়ের প্রধান উৎসের স্থান সিলেক্ট করে সাবমিট করতে হবে।
এরপর স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার রিটার্ন খসড়া পেজ আসবে। সেখান থেকে আপনি আপনার আয়ের উৎস, মোট পরিসম্পদ, মোট আয়, আরোপযোগ্য কর, কর রেয়াত, প্রদেয় কর, উৎসে কর্তিত কর, এই রিটার্নের সহিত প্রদত্ত কর, জীবনযাপন ব্যয় উল্লেখ করতে পারবেন।
এরপর নিচের সেভ এজ ড্রাফটে ক্লিক করে সেভ করতে পারবেন। আবার সব ঠিকঠাক থাকলে ডানপাশের সাবমিট রিটার্ন অনলাইন বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করতে পারবেন।
ডিটেইল রিটার্ন
ডিটেইল রিটার্ন অপশনে ক্লিক করলে এসেসমেন্ট ইনফরমেশন ও হেডস অফ ইনকাম এর পেজ আসবে। এখানে রিটার্ন স্কিম ঘরে সেল্ফ, এসেসমেন্ট ইয়ার ও ইনকাম ইয়ারের ঘরে সাল ও তারিখ ডিফল্ট থাকবে। এরপর ডান পাশের হেডস অফ ইনকামের নিচের অপশনগুলোতে টিক দিতে হবে।
যেমন- ইনকাম ফ্রম ইম্পলয়মেন্ট; ইনকাম ফ্রম রেন্ট; ইনকাম ফ্রম এগ্রিকালচার; ইনকাম ফ্রম বিজনেজ; ক্যাপিটাল গেইনস; ইনকাম ফ্রম ফিনান্সিয়াল এসেটস ও ইনকাম ফ্রম আদার সোর্সেস। এছাড়াও এর নিচে বাংলাদেশের বাইরে থেকে ইনকাম হলে সেই ঘরেও টিক দিতে হবে। এরপর সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এরপর এডিশনাল ইনফরমেশনে কোথায় চাকরি করেন সেই স্থানের নাম সিলেক্ট করতে হবে। যেমন- ঢাকা নর্থ সিটি করপোরেশন, ঢাকা সাউথ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, আদার সিটি করপোরেশন, এনি আদার এরিয়া। এরপর ক্লেম ট্যাক্স রেবেট ফর ইনভেস্টমেন্ট, নিজের মোটর কার আছে কিনা বা সিটি করপোরেশনের মধ্যে নিজের বাড়ি- এসব তথ্যে টিক দিয়ে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এখন এসেসমেন্ট, ইনকাম, রেবেট, এক্সপেনডিওর, এসেটস অ্যান্ড লায়াবিলিটিস ও ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট অপশনের পেজগুলো পূরণ করতে হবে। এর পর রিটার্ন ভিউ দেখে নিয়ে সব ঠিকঠাক থাকলে পেজের নিচের সাবমিট রিটার্ন বাটনে ক্লিক করে রিটার্নটি সাবমিট করতে পারবেন।
অফলাইন (পেপার) রিটার্ন তৈরি
ই-রিটার্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইন ইন করে প্রয়োজনীয় অংশগুলোতে ইনপুট দিয়ে এগুতে থাকুন। এবার ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট অংশে গিয়ে প্রসিড টু অফলাইন (পেপার) রিটার্ন সিলেক্ট করুন। ব্যস, আপনার অফলাইন (পেপার) রিটার্ন তৈরি হয়ে পিডিএফ ফরম্যাটে সেভ হয়ে যাবে।
সূত্র : দেশ রূপান্তর