রমজানে রাজধানীসহ সারা দেশে সরকার নির্ধারিত ন্যায্য মূল্যে গরুর মাংস বিক্রেতাদের যদি কেউ হুমকি-ধমকি দেয় এবং অনিরাপত্তায় ভোগে তাহলে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দেবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রাজশাহীর বাঘা এলাকার গরুর মাংস বিক্রেতা মামুন হোসেনকে হত্যাকারী অপর মাংস ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ওরফে খোকনকে মাদারীপুর থেকে গ্রেফতারের পর সোমবার কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত বা ন্যায্যমূল্যে যাঁরা পণ্য বিক্রি করবেন তাঁরা যদি কোনো হুমকি পান, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বা তাঁদের ব্যবসায় যদি কেউ প্রতিবন্ধকতা করে তাহলে অবশ্যই তাঁদের জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। প্রত্যেকটি বাজারের আশপাশে আমাদের অফিস আছে, আমাদের টহল দল আছে বা সাদা পোশাকে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করে। তাঁদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আমরা ব্যবসায়ীদের পাশে থাকব।’
গত ২০ জানুয়ারি সকলে রাজশাহীর বাঘা থানার আড়ানী হাটে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় মাংস ব্যবসায়ী মামুনকে মাংস কাটার ছুরি দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে জখম করেন অপর একজন মাংস ব্যবসায়ী খোকন। পরে স্থানীয় জনগণ তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মামুনের ছোট ভাই বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর গ্রেফতার এড়াতে খোকন পার্শ্ববর্তী এলাকায় তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে স্থায়ীভাবে আত্মগোপনের জন্য মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় তাঁর এক বন্ধুর মাধ্যমে ড্রেজার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকেন। শিবচর থেকে গতকাল (রোববার) র্যাব তাঁকে গ্রেফতার করে।
খোকন র্যাবের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার মঈন বলেন, খোকন মাংস ব্যবসার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে রাজশাহীর বাঘা থানায় মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলা আছে। এসব মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।
হত্যাকারী খোকন ও ভুক্তভোগী মামুন নিকট আত্মীয়। একই জায়গায় তাঁরা দীর্ঘদিন একসঙ্গে মাংস ব্যবসা করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে সরকার নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে দুজনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। মামুন সরকার নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এতে তাঁর দোকানে মাংস বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং খোকনের দোকানে মাংস বিক্রির পরিমাণ কমে যায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে খোকন মামুনকে হত্যা করেন। এই ঘটনায় খোকনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।