যৌন হয়রানির দায়ে বহিষ্কৃত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) চিকিৎসা কেন্দ্রের উপপ্রধান চিকিৎসক ড. রাজু আহমেদের পুনর্বাসনের অপচেষ্টা করা হচ্ছে দাবি করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এক মানববন্ধনে এই প্রতিবাদ জানান তারা। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্যারিস রোড থেকে একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবন ঘুরে পুনরায় প্যারিস রোডে এসে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা, 'ফ্যাসিবাদের দোসর ক্যাম্পাসে কেনো?', 'রাজুর কালো হাত ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও', 'লুইচ্চা রাজুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে', 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস', ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানি কেন?' প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
মানববন্ধনে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সরোয়ার হোসেন বলেন, যৌন নিপীড়নের দায়ে ৫৩১তম সিন্ডিকেট সভায় বহিষ্কৃত ড. রাজুকে ক্যাম্পাসে পুনর্বাসনের অভিযোগ উঠেছে। নতুন প্রশাসন তার স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়ায় তিনি আবার ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। একইসঙ্গে হাইকোর্টে রিট করে পুনর্বহালের চেষ্টা চালাচ্ছেন। চিহ্নিত ফ্যাসিস্ট ও যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. রাজুকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীরা সন্দিহান ও এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী লাকী এনাম বলেন, ডা. রাজু আহমেদ আমাদের বিভাগের এক শিক্ষকের মেয়েকে যৌন হয়রানি করেছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জেনেছি কিছু কুচক্রী মহল তাকে পুণর্বাসনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতে আজকে আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ৩০ অক্টোবর রাতে নগরীর তালাইমারীর আমেনা ক্লিনিকে দাঁতের চিকিৎসাকালে ডা. রাজুর বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মেয়েকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে। ঘটনাস্থলেই ভুক্তভোগীর মা ও স্থানীয়রা তাকে মারধর করে। সেদিনই নগরীর বোয়ালিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা (বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক)। পরে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ডা. রাজুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩১তম সিন্ডিকেট সভায় স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত হয়।