রাবিতে বাড়তি শিক্ষক নিয়োগে অতিরিক্ত খরচ ৩১ কোটি টাকা - দৈনিকশিক্ষা

অডিট আপত্তিরাবিতে বাড়তি শিক্ষক নিয়োগে অতিরিক্ত খরচ ৩১ কোটি টাকা

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কাঠামোর (অর্গানোগ্রাম) বাইরে নিয়োগ পাওয়া জনবলের বেতনভাতা হিসেবে ৩০ কোটি ৮১ হাজার ৬০০ টাকা খরচ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিল ফাঁকি দিয়েছেন অনেক শিক্ষক ও কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফরমের টাকা খরচের ক্ষেত্রেও মানা হয়নি ইউজিসির নির্দেশনা। ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের অডিটে উঠে এসেছে এসব চিত্র।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবদুস সালাম বলেন, ‘নিয়মের বাইরে কিছুই হয়নি। অডিটের সময় হয়তো তাৎক্ষণিক কাগজপত্র দাখিল করতে না পারায় এ ধরনের কথা এসেছে। পরে শুনানিতে এগুলো সমাধান হয়ে গেছে।’

অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন- ইউজিসি অনুমোদিত অধ্যাপকের পদ ছিল ২০১টি ও সহযোগী অধ্যাপকের পদ ২১৭টি। কিন্তু অর্গানোগ্রামের তুলনায় অধ্যাপক পদে অতিরিক্ত ২৪৮ জন এবং সহযোগী অধ্যাপক পদে ৭৭ জন নিয়োগ পান। তাদের বেতনভাতা হিসেবে মোট ৩০ কোটি ৮১ হাজার ৬০০ টাকা খরচ হয়।

সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলেন, ‘বেশ কিছুদিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্বচ্ছতা লক্ষ করা যাচ্ছে। এর প্রধান কারণে হলো ৭৩-এর অ্যাক্ট না মানা। ওই অ্যাক্ট অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার কথা, সিনেট ও সিন্ডিকেট নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু হয় না। কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই। বরং অ্যাক্ট লঙ্ঘন করে অন্তত এক ডজন পদে কর্মকর্তাদের বদলে শিক্ষকদের প্রশাসক হিসেবে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার।’

অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে বই ভাতা, দায়িত্ব ভাতা ও মহার্ঘ ভাতা হিসেবে দুই কোটি ২৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ১৬৭ জন ১২০০ টাকা হারে বই ভাতা হিসেবে এক কোটি ৬৮ লাখ ৪ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এতে খরচ হয় দুই কোটি ৮০ লাখ ৮ হাজার টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১১৯৪ জন পাওয়ার কথা এক কোটি ৭১ লাখ ৯৩ হাজার ৬০০ টাকা। কিন্তু তাদের দেওয়া হয় দুই কোটি ৮৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। দায়িত্ব ভাতার ক্ষেত্রেও একই হাল। দায়িত্বপালনকারীরা মাসে দেড় হাজার টাকা করে পাওয়ার কথা। কিন্তু ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ৩৫ জনকে দেওয়া হয় চার হাজার টাকা করে এবং ১৪৬ জনকে দেওয়া হয় তিন হাজার টাকা করে। পরের অর্থবছরে দায়িত্ব ভাতা হিসেবে ৪২ জনকে ৬ হাজার টাকা করে এবং ১৫১ জনকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এভাবে দুই অর্থবছরে অতিরিক্ত এক কোটি ২২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

অডিট প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনে থেকেও বিদ্যুৎ বিলে ফাঁকি দিয়েছেন শিক্ষকরা। এ খাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ লাখ ৬ হাজার ৮২৭ টাকা গচ্চা গেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ খরচ কাটা হয় প্রতি ইউনিট ৪০ পয়সা করে। এটুকু সুযোগ না দিলে তো কেউ আবাসিক কোয়ার্টারে থাকবেন না। অডিটের সময় বিদ্যুতের দাম সরকারি রেটে মূল্যায়ন করায় এমন আপত্তি এসেছে।’

অডিট প্রতিবেদন বলছে, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফরম বিক্রি হয় ৮ কোটি ৬০ লাখ ৩২ হাজার ৬১৮ টাকার। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে আসে ১০ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ইউজিসির নির্দেশনা রয়েছে ভর্তি ফরমের ৪০ শতাংশ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দিতে হবে। কিন্তু ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ৪০ শতাংশের কম অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে রাখা হয়।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট বিভাগ, কৃষি প্রকল্প ও শিক্ষা ছুটি ফেরত তহবিল থেকে চার কোটি ৩৫ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৫ টাকা উত্তোলন কিংবা স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে ব্যয়ের কোনো নথি অডিট চলাকালে কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ বছরের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে - dainik shiksha স্কুলে ভর্তির আবেদন করবেন যেভাবে এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে - dainik shiksha এইচএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের ফল বৃহস্পতিবার, জানবেন যেভাবে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি - dainik shiksha অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ২ জানুয়ারি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তোপের মুখে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! - dainik shiksha দপ্তরসহ সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রীকে চালাতেন পিয়ন! ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! - dainik shiksha ৬১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগ চূড়ান্ত! গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল - dainik shiksha গণভবন, ভিকারুননিসার বোন ও আইডিয়ালের কলোনি কোটা বাতিল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ - dainik shiksha ভাসানী, শেরেবাংলা-সোহরাওয়ার্দীকেও জাতির পিতা করার পরামর্শ সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস - dainik shiksha সমন্বয়কদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সাবধান: সারজিস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035669803619385