রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষার কারণে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের তিনটি ট্রেনের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীর চাপ বিবেচনায় অন্য পাঁচটি ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব ট্রেন রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচল করে।
ভর্তি পরীক্ষার সময় এসব ট্রেন চলাচল এবং অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রাখতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আউয়াল গতকাল সোমবার সংশ্লিষ্ট সব শাখায় চিঠি দিয়েছেন। আব্দুল আউয়াল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আব্দুল আউয়াল বলেন, রাবির ভর্তি পরীক্ষার কারণে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটে চলাচলকারী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের আগামী ২৮ মের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটের পদ্মা এক্সপ্রেস এবং খুলনা-রাজশাহী-খুলনা রুটের কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের ৩০ মের সাপ্তাহিক ছুটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষার কারণে গোবরা-রাজশাহী-গোবরা রুটের টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনে ২৭ মে থেকেই অতিরিক্ত দুটি কোচ সংযোজন করা হবে। এর মধ্যে একটি প্রথম শ্রেণি এবং একটি শোভন চেয়ার আসনের কোচ। এই ট্রেনটিতে অতিরিক্ত কোচ থাকবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
অন্য চারটি ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ থাকবে ২৮ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত। এর মধ্যে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটের সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি প্রথম শ্রেণি ও একটি শোভন চেয়ারের কোচ; ঢালারচর-রাজশাহী-ঢালারচর রুটের ঢালারচর এক্সপ্রেসে একটি করে প্রথম শ্রেণি ও শোভন চেয়ারের কোচ অতিরিক্ত সংযোজন হবে। আর রাজশাহী-খুলনা রুটের সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস এবং পঞ্চগড়-রাজশাহী রুটের বাংলাবান্ধা এক্সপ্রেস ট্রেনে একটি করে প্রথম শ্রেণির কোচ সংযোজন করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আব্দুল আউয়াল।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, রাবির ভর্তি পরীক্ষার সময় যাত্রীর চাপ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এ জন্য পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একটু সুবিধার জন্য ট্রেনের ছুটি বাতিল এবং অতিরিক্ত কোচ সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাবিতে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার জন্য এ বছর চূড়ান্ত আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জনের। ৩ হাজার ৯৩০টি আসনের জন্য এই শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসবেন। প্রতি আসনের জন্য লড়বেন ৪৫ জন শিক্ষার্থী। ২৯ মে প্রথমে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে। এরপর ৩০ মে ‘এ’ ইউনিটের এবং ৩১ মে ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা হবে। প্রতি ইউনিটে চার শিফট করে মোট ১২ শিফটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ রাজশাহী আসবেন।
এ জন্য আগে থেকেই বুক হয়ে গেছে শহরের সব হোটেলের কক্ষ। কোথাও একটি কক্ষও এখন ফাঁকা নেই। প্রতিবছরই রাবির পরীক্ষার সময় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য কয়েক বছর ধরে ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযোজন ও ট্রেনের ছুটি বাতিল করছে রেল কর্তৃপক্ষ। তার পরও যাত্রীর চাপ সামাল দেওয়া সম্ভব হয় না। গত বছর পরীক্ষা শেষে ফেরার সময় ট্রেনে উঠতে না পেরে বিক্ষোভ করেছিলেন রাবির ভর্তিচ্ছুরা। ক্ষোভে তাঁরা রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে রেললাইন অবরোধ করে রাখেন কয়েক ঘণ্টা।