রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুজন সেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী ও অশিক্ষকসুলভ আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার অপসারণের দাবি জানিয়েছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ২০০ পেইজের অভিযোগপত্র জমা দেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বিভাগের সভাপতি বরাবর ওই পত্রের অনুলিপি দেন তারা।
এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে চারুকলা অনুষদের মুক্তমঞ্চের সামনে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। পরবর্তীতে শিল্পচর্চা জয়নুল আবেদিন একাডেমিক ভবনের সামনে অভিযুক্ত শিক্ষকের কুশপুত্তলিকা পোড়ান শিক্ষার্থীরা।
এ সময় ‘ভাউচার সুজনের দুই গালে’, ‘জুতা মারো তালে তালে’, ‘এক দফা এক দাবি, সুজন সেনের চাকরিচ্যুতি’, ‘কুলাঙ্গার শিক্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’, ‘সুজনের চামচারা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘তেলবাজি না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘চারুকলায় দুর্নীতি, চলবে না চলবে না’, ‘দালালদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ এসব স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা জানান, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শুরু থেকেই গ্রাফিতি আঁকা ছাড়াও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নেন চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের সুন্দর বাংলাদেশ গঠনে নতুনভাবে আশান্বিত করে। এটি সমুন্নত রাখতে বিভাগের শিক্ষক ড. সুজন সেন কর্তৃক দীর্ঘদিনের অন্যায়, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতামূলক কাজের বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হয়েছেন তারা।
অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ড. সুজন সেনের বিরুদ্ধে বিভাগের বর্তমান ও সাবেকদের মধ্যে ৪৬ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে গুগল ফর্ম পূরণের মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিভাগের সামনে ব্যানার টানিয়ে দিয়েছেন ও বিচার দাবিতে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও করেছেন। একইসঙ্গে শহীদ জিয়াউর রহমান হলে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে ‘ফাদার অব ক্রিমিনালস্’ অ্যাখ্যা দিয়ে হল গেটেও ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা।
পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধানী প্রচেষ্টায় বিভাগে এবং হলে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে শহীদ জিয়াউর রহমান হলে প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন বিষয় অভিযোগপত্রে তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ড. সুজন সেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. বনি আদম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দেওয়া অনুলিপি পেয়েছি। সোমবার বিভাগের শিক্ষকরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো। অধিকাংশ শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।