রাবি শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিতে চোরকে ভ্যানসহ আটক - দৈনিকশিক্ষা

রাবি শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিতে চোরকে ভ্যানসহ আটক

রাবি প্রতিনিধি |

রাতে ক্ষুধা লাগায় কয়েকজন বন্ধু মিলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজারে নাস্তা করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ম‌ওদুদ হাসান। এসময় সোহরাওয়ার্দী হলের সামনের রাস্তা দিয়ে এক ভ্যানচালকের পিছু নিয়ে আরেক রিকশাচালককে ধাওয়া করতে দেখেন তারা। রিকশাচালক সামনের ভ্যানচালককে চোর চোর বলে সম্বোধন করছিলেন। কিন্তু থামানোর পর ভ্যানচোরই তার পিছু ধাওয়া করা রিকশাচালকে ছিনতাইকারী বলতে থাকেন। 

এমন পরিস্থিতিতে বুদ্ধি খাটিয়ে ভ্যানের আসল মালিকসহ চোরকে ধরে ফেলেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মওদুদ হাসান ও তার সহপাঠী ও বন্ধু শাকিল মাহমুদ, আবু সাঈম, আবদুল্লাহ আল মামুন মিলে বুধবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজার সংলগ্ন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের নিকটে চোরের হাত থেকে ভ্যানটি এভাবে উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে মওদুদ হাসান বলেন, আমরা চোরকে ভ্যানসহ আটক করি। কিন্তু বেকায়দায় পড়ি চোর‌ও পাল্টা তার পিছু ধাওয়া করা রিকশাচালককে ছিনতাইকারী বলাতে।

নিশ্চিত হওয়ার জন্য আমরা সেই ভ্যানচোরের বাসায় ফোন দিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ঘটনাস্থলে আসতে বলি এবং ভ্যানটি আলাদা জায়গায় রাখি। 

তারপর সেই ভ্যানচোরের পরিবারের সদস্যরা আসে। তখন আমরা বুদ্ধি করে তাদেরকে কোনো কিছু বুঝতে না দিয়ে অন্য একটা রিকশা দেখিয়ে জানতে চাই, ‘সেটা তাদের রিকশা কিনা?’ তখন সেই ভ্যানচোরের পরিবারের সদস্যরা অন্যের রিকশাটিকে দেখে নিজদের রিকশা বলে দাবি করলে আমরা ধরে ফেলি ভ্যানচালকটি প্রকৃতপক্ষে চোর। কারণ, সে তো রিকশা নিয়েই আসেনি।

তারপর তার পরিবারের সদস্যদের বাসায় চলে যেতে বললে তারা চলে যায়।

তিনি আরো বলেন, চোরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শহীদ শামসুজ্জোহা হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে আসলে সে চুরির বিষয়টি স্বীকার করে। ভ্যানটি কোথা থেকে চুরি করেছে সে বিষয়ে জানানোর পাশাপাশি এর আগে সে আরো চুরি করেছে বলে জানায়। পরে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পরামর্শে চোরকে নগরীর মতিহার থানা পুলিশের হাতে তুলে দেই। পূর্ববর্তীতে ভ্যানের প্রকৃত মালিক হলে উপস্থিত হয়ে উপযুক্ত প্রমাণ দিলে থানা পুলিশের উপস্থিতিতে আমরা ভ্যানটি তাকে দিয়ে দেই।

জানতে চাইলে চোরকে ধরিয়ে দেওয়া রিকশাচালক রাজশাহীর চারঘাট থানার বাসিন্দা জামরুল ইসলাম বলেন, এই চোর একদিন গভীর রাতে আমার রিকশায় বানেশ্বর থেকে একটা রেঞ্জার সাইকেল নিয়ে কাটাখালিতে যায়। তার সাইকেলে হাওয়া নেই এমন কথা বলে তিনি আমার রিকশায় উঠেছিলেন। কিন্তু রিকশা থেকে নামার পর দেখি তার সাইকেলে হাওয়া আছে।

বিষয়টি বুঝে উঠার আগেই সে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আরেকদিন গভীর রাতে তাকে দেওয়ানপাড়াতে একটি ভ্যান নিয়ে যেতে দেখি। এসময় থামতে বললে, সে সামনে যাব বলে দ্রুত গতিতে পালিয়ে চলে যায়। আমার যাত্রী থাকায় তাকে সেদিন ধরতে পারিনি।

রিকশাচালক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে মির্জাপুর স্কুলের সামনে দেখি একটা ফাঁকা ভ্যান নিয়ে সে আমাকে অতিক্রম করছে। এসময় আমি রিকশা ঘুরিয়ে ভ্যান কোত্থেকে আনছে সে বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করি। এসময় সেই আমাকে বলে ‘পুলিশের কাছে চল, তুই আমাকে ছিনতাই করছিস’। তখন তার কথামতো তাকে পুলিশ ফাঁড়িতে যেতে বলি আমি। কিন্তু সে বুঝতে পেরে ভ্যানটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে।

তিনি আরো বলেন, আমার রিকশায় বিনোদপুর গেটের এক আনসার সদস্যকে নিয়ে আমি তাকে ধাওয়া করি। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে থেকে কিছু শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তাকে ধরতে পারি। শিক্ষার্থীদের জন্যই তাকে ধরা সম্ভব হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির দায়ে অভিযুক্ত মো. বাদশা বলেন, ‘আমার বাসা ভদ্রা জামালপুরে। আমি গত দুই তিন বছর যাবৎ চুরি করি। তবে ক্যাম্পাসে কখনো চুরি করি না। ক্যাম্পাসের ছাত্রদের জন্য ভয় পাই।

তিনি আরো বলেন, আজকের চুরির বিষয়টি সত্য। এটি চাপাল থেকে চুরি করেছি। আমি পেটের দায়ে চুরিটা করেছি। কাজ করেও খেতে পারি।

এদিকে চুরি হওয়া ভ্যান ফিরে পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভ্যানের প্রকৃত মালিক রোকনউদ্দীন। রাজশাহীর চাপাল এলাকার এই ব্যক্তি বলেন, সকাল থেকে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ভ্যানটি পাচ্ছিলাম না। ক্যাম্পাসের ছাত্র বাপেরা আমাকে বাঁচাল। এই ভ্যানটিই আমার আয় রোজগারের একমাত্র সম্বল।

প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ - dainik shiksha প্রায় দুই লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর পাঁচ লাখ খাতা চ্যালেঞ্জ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা - dainik shiksha ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীরা, রোজ সম্মানী পাবেন ৫০০ টাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ - dainik shiksha বেসরকারি মেডিক্যাল-ডেন্টালের ভর্তি ফি নির্ধারণ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ - dainik shiksha ঢাবিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধে গণভোটের দাবিতে বিক্ষোভ নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে - dainik shiksha নিম্নমানের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হবে আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে - dainik shiksha আসিফ নজরুলের সাথে কি ঘটেছিল জেনেভা বিমানবন্দরে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031619071960449