রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে যেসব সুবিধা পাবেন আবদুল হামিদ - দৈনিকশিক্ষা

রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে যেসব সুবিধা পাবেন আবদুল হামিদ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল রোববার শেষ হয়েছে। একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি কী কী সুবিধা পাবেন তা বলা আছে রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনে। এই আইন মতে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে কমপক্ষে ছয় মাস দায়িত্ব পালন শেষে পদত্যাগ করলে অথবা মেয়াদ শেষ হলে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সর্বশেষ মাসিক যে সম্মানী পেতেন, তার ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসর ভাতা পাবেন।

‘দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট, ১৯৭৫ (মে, ২০১৬ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী, বর্তমানে রাষ্ট্রপতির মাসিক সম্মানী ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। সে হিসাবে অবসরের পর মো. আবদুল হামিদ মাসে ৯০ হাজার টাকা অবসর ভাতা পাবেন।

আইনে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে অন্য কোনো চাকরি বা পদ থেকে অবসরে গিয়ে অবসর ভাতা গ্রহণ করলে তিনি ওই অবসর ভাতা এবং রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতার মধ্যে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো একটি ভাতা পাওয়ার যোগ্য হবেন। রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা গ্রহণ করে মারা গেলে তাঁর বিধবা স্ত্রী অথবা ক্ষেত্রমতে বিপত্নীক স্বামী তাঁর প্রাপ্য অবসর ভাতার দুই-তৃতীয়াংশ হারে আমৃত্যু মাসিক ভাতা পাবেন।

আনুতোষিক বা এককালীন অর্থ
অবসর ভাতা গ্রহণের প্রাধিকার অর্জন করা সাবেক কোনো রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতার পরিবর্তে আনুতোষিকও (এককালীন অর্থ) গ্রহণ করতে পারবেন। এ জন্য তাঁকে প্রাধিকার অর্জনের তারিখ থেকে এক মাসের মধ্যে অবসর ভাতার পরিবর্তে আনুতোষিক গ্রহণের ইচ্ছার কথা জানাতে হবে। আনুতোষিকের পরিমাণ এক বছরের জন্য প্রদেয় অবসর ভাতার তত গুণ হবে, যত বছর কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকার সময়সীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে আংশিক বছরকে পুরো বছর হিসেবে গণনা করা হবে।

কোনো ব্যক্তি ছয় মাসের বেশি রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থাকা অবস্থায় আনুতোষিক পাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত না করে অথবা অবসর ভাতা গ্রহণ না করে মারা গেলে তিনি আনুতোষিক পাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন বলে গণ্য হবে। তখন আনুতোষিকের টাকা মনোনীত ব্যক্তি অথবা উত্তরাধিকারীরা পাবেন। 

অন্যান্য যেসব সুবিধা 
অবসরে যাওয়ার পর সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে অন্যান্য কিছু সুবিধাও পাবেন। আইন অনুযায়ী সাবেক রাষ্ট্রপতি একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটেনডেন্ট (সাহায্যকারী) পাবেন। দাপ্তরিক খরচও পাবেন, এটির মোট বাৎসরিক পরিমাণ সময়ে সময়ে সরকার নির্ধারণ করবে।

চিকিৎসা সুবিধা
একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসা সুবিধার সমপরিমাণ চিকিৎসা সুবিধাদি পাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিনা খরচে সরকারি যানবাহন ব্যবহার, আবাসস্থলে একটি টেলিফোন সংযোগ পাবেন ও সরকার সময়ে সময়ে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত এর বিল পরিশোধ থেকে অব্যাহতি দেবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে একটি কূটনৈতিক পাসপোর্টও পাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। তখন তিনি দেশের ভেতর ভ্রমণকালে সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্টহাউসে ভাড়া ছাড়াই অবস্থানের সুবিধা পাবেন।

আইন অনুযায়ী, চিকিৎসা সুবিধা, কূটনৈতিক পাসপোর্ট এবং দেশের ভেতরে সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্টহাউসে বিনা ভাড়ায় অবস্থানের সুবিধা সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রীও পাবেন। 

সুবিধা পাবেন না যে কারণে
কী কী কারণে একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন না, তা–ও উল্লেখ আছে আইনে। এগুলো হচ্ছে, রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব শেষে এমন কোনো দপ্তরে, আসনে, পদে বা মর্যাদায় যদি দায়িত্ব পালন করেন, যেখানে নির্ধারিত তহবিল থেকে সম্মানী বা অন্য কোনো সুবিধা পেলে রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পাওয়া যাবে না।

অবসর ভাতার প্রাধিকার পাওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধের দায়ে দণ্ডিত হলেও ওই সব সুবিধা পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া অসাংবিধানিক পন্থায় বা অবৈধ উপায়ে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন বলে উচ্চ আদালত ঘোষণা করলেও সাবেক কোনো রাষ্ট্রপতি ওই সুবিধা পাবেন না। 

মো. আবদুল হামিদের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন 
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন মো. আবদুল হামিদ। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৫৯ সালে, ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ এর ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। এর পর কিছুদিন স্পিকার হিসেবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ। আর নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল প্রথম দফায় দেশের ২০ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন আবদুল হামিদ। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১ তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। আজ ২৩ এপ্রিল তাঁর রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হয়। এর আগে তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত মো. জিল্লুর রহমান বিদেশে চিকিৎসাধীন থাকার সময় জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বও পালন করেন।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0057458877563477