সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের পাঁচ সিটির নির্বাচন। নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ ছিলো আজ সোমবার (৩ জুলাই)। শপথ ও পূর্ববর্তী মহড়ার জন্য তারা ঢাকায়। সব সিটি মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক ঘনিষ্টজনেরা ঢাকার বিভিন্ন হোটেল-স্বজনদের বাসাবাড়িতে উঠেছেন। তবে ব্যতিক্রম সিলেট সিটি করপোরেশন। নির্বাচিত মেয়র, ৫৬ জন কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী মিলিয়ে প্রায় একশ’ জনের বহর নিয়ে তারা অবস্থান করছেন পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁওয়ে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, সিলেট সিটির মেয়র-কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের হোটেল সোনারগাঁওয়ের বিল সংস্থার তহবিল থেকে পরিশোধ করা হবে। সরকারের সেবাধর্মী এই প্রতিষ্ঠানটির অর্থনৈতিক কাঠামো অত্যন্ত দুর্বল। সে সংস্থার টাকায় জনপ্রতিনিধিদের যাত্রার শুরুতে এমন বিলাসিতা হতাশার সৃষ্টি করছে।
জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হক বলেন, আমরা হোটেল সোনারগাঁওয়ে উঠেছি। খরচ কে দেবে; সেটা পরে দেখা যাবে।
তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা যায়, বরিশাল ও গাজীপুর সিটির মেয়র-কাউন্সিলররা সম্পূর্ণ নিজস্ব তত্ত্বাবধানে শপথ মহড়া ও শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। খুলনা ও রাজশাহী সিটি মেয়র নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ঢাকায় রয়েছেন। খুলনা সিটির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা উঠেছেন হোটেল ৭১-এ। আর রাজশাহী সিটির কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা অবস্থান করছেন হোটেল ভিক্টরিতে। তাদের ঢাকায় আনা ও হোটেলে রাখার সমন্বয়ের কাজ করছেন সংস্থার কর্মকর্তারা। এসব টাকাও সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে খরচ করা হবে বলে জানা গেছে।
রাজশাহী সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এ বি এম শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘মেয়র মহোদয় নিজ বাসায় থাকছেন। কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা হোটেল ভিক্টরিতে উঠেছে; আমিও সেখানে আছি। সংস্থার এক কর্মকর্তা এগুলোর সমন্বয় করছেন। খরচ কে বহন করবে সেটা পরিস্কার নয়। তবে আমি তাদের বলেছি এর আগেরবার যেভাবে হয়েছে, সেভাবে করতে।’
এর আগেরবার কিভাবে খরচ বহন করা হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সে সময় আমি এখানকার দায়িত্বে ছিলাম না। আমি সেসব জানি না ওই কর্মকর্তা জানেন।’
খুলনা সিটি করপোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আজমুল হক বলেন, ‘মেয়র মহোদয় নিজ বাসায় রয়েছেন। কাউন্সিলররা হোটেল ৭১-এ অবস্থান করছেন। আর আমরা কর্মকর্তারা বিয়াম মিলনায়তনে রয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের নগর উন্নয়ন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলররা তাদের নিজ নিজ দায়িত্বে আসবেন, শপথ গ্রহণ করবেন। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয় না।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখানে মেয়রপদে বিজয়ী হন জায়েদা খাতুন। গত ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহীর নবনির্বাচিত মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান ও সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। গত ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। খুলনায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তালুকদার আবদুল খালেক ও বরিশালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।