যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রতি বছরের মতো এ বছরও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ দেয়া হয়।
এ বছর ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশের মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের পুরোগামী নেতা, বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম এবং সংগঠন হিসেবে ‘এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অফ দা কমন পিপল’ (এলকপ)-কে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক দেয়া হয়।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে এ পদক দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা’ দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তার বক্তৃতার বিষয়: ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন এবং ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার’। দাপ্তরিক প্রয়োজনের তাগিদে তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে পারেননি। তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্মূল কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল।
‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র সভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দিন, বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, এলকপ-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান আসিফ মুনীর।
বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য সারা দেশে ৭৩টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার আরম্ভ করেছিলেন কিন্তু ’৭৫-এর পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তিতে ’৯২ সালে শহীদজননী জাহানারা ইমাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য যে সাহসী উদ্যোগ নিয়েছিলেন সেই আন্দোলন আমরা এখনো এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেরকম বাংলাদেশ চেয়েছিলাম এখনো তা প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি।’
সংগঠন হিসেবে ‘এম্পাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অফ দা কমন পিপল’ (এলকপ)-কে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ দেয়ায় নির্মূল কমিটিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই সম্মাননা ‘এলকপ’-কে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবায়নের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে প্রেরণা যোগাবে।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নির্মূল কমিটি’র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা। সভায় বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতি নির্মূলের আহ্বান জানান।
এর আগে সকাল ৮টায় মিরপুরে শহীদজননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন নির্মূল কমিটির নেতারা।