মাদারীপুরের শিবচরে দরিদ্র পরিবারের সন্তান শারমিনের পড়ালেখার দায়িত্ব নিলো জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য নুর ই আলম চৌধুরী এমপি।
শারমিন উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের রহমতুল্লাহ হাজীর কান্দি গ্রামের ভ্যানচালক আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে। সে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় স্থানীয় নুর উদ্দিন মাদবরের কান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ অর্জন করে।
এর আগে গত ১ আগস্ট দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল “অভাব-নদীভাঙন ঠেকাতে পারেনি শারমিনের জিপিএ-৫ ” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই প্রচারিত সংবাদটি দৃষ্টিগোচর হয় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নুর ই আলম চৌধুরী এমপিসহ স্থানীয় লোকজনের।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চিফ হুইপের পক্ষে মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা মুন্নী, বন্দর খোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সাদ্দাম ও বন্দর খোলা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লতিফা ইয়াসমিন লতা মিষ্টি নিয়ে শারমিনের বাড়ি যায়।
এ সময় তারা শারমিনের পড়ালেখার সকল দায়িত্ব জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ গ্রহণ করবেন বলে জানান। এদিকে, এ খবর পেয়ে শারমিন ও তার পরিবারের দুশ্চিন্তা কেটেছে।
আবেগে আপ্লুত শারমিনের মা লাকী বেগম জানান, মেয়েটি কষ্ট করে এ প্লাস পেয়েছে। মেয়ের কলেজে পড়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে যায়। অভাবের কারণে মেয়েকে কলেজে ভর্তি করাতে পারবো কি না তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। এমপি সাহেব মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন এজন্য তিনি চিফ হুইপের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শারমিন বলেন, দারিদ্রের কষাঘাতের মধ্য দিয়ে অনেক কষ্ট করে আমি পড়াশোনা করেছি। আমার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়া, আমি রোগীদের সেবা করতে চাই। আমার পড়াশোনা ভার আমাদের চিফ হুইপ মহোদয় নিয়েছেন। আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া। খুব চিন্তিত ছিলাম কলেজে ভর্তি নিয়ে। এখন পড়াশোনা নিয়ে চিন্তামুক্ত হলাম। আমি আমাদের চিফ হুইপের অবদান চিরদিন মনে রাখবো। ভবিষ্যতে আমি একজন মানবিক ডাক্তার হয়ে দেশ ও দেশের জনগণের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চাই।
বন্দরখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সাদ্দাম বলেন, শারমিন আমার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মেয়ে। সে কষ্ট করে ৫ কিলোমিটার দূরের স্কুলে গিয়ে ভাল ফলাফল করছে এজন্য আমরা খুব খুশি। আমাদের অভিভাবক মাননীয় চিফ হুইপ মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে এজন্য আমি বন্দরখোলা বাসীর পক্ষে তাকে ধন্যবাদ জানাই।
মাদারীপুর জেলা পরিষদের সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা মুন্নী বলেন, আমি আসলে নিউজের মাধ্যমে জানি যে বন্দরখোলা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মেয়ে এতো ভালো ফলাফল করেছে। সে বাড়ি পাঁচ কিলোমিটার দূরে তার স্কুলে পায়ে হেঁটে যেত। এই খবরটি আমাদের মাননীয় এমপি মহোদয়ের কাছে যায়। পরে তিনি আমাকে জানান। আমি তার পক্ষে ওকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য মিষ্টি নিয়ে আসি। শারমিন ও তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা হলো। আমি গিয়ে এমপিকে জানাবো। অবশ্যই তিনি শারমিনের পাশে থাকবেন। এমপি সাহেব তার পড়াশোনার সব দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।
এ সময় নুর উদ্দিন মাদবরের কান্দি এসইএসপিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, বন্দর খোলা ইউনিয়ন যুব লীগের সভাপতি খোকন শেখ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহদপ্তর সম্পাদক রকিবুজ্জামান রুবেল উপস্থিত ছিলেন।