দৈনিকশিক্ষাডটকম লক্ষ্মীপুর: রামগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করেছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়নের মধ্য মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষক মো. কামাল হোসেন বিল্লালকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষককে মারধর করা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সভাপতি এ কে এম ফারুক।
বিদ্যালয়সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ কে এম ফারুক গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে যান। এ সময় তিনি শিক্ষকদের কমনরুমে গিয়ে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাশের মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য চাপ দেন। শিক্ষক কামাল ওই বিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের ক্লাস ভালো হয় না বলার সঙ্গে সঙ্গে টেবিল থেকে স্কেল নিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন ফারুক। পরে অন্য শিক্ষকেরা কামালকে হাসপাতালে ভর্তি করান।
আহত শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রায়ই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। বুধবার সকালের দিকে বিদ্যালয়ে এসে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় আমি মাছিমপুর উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের ক্লাস খুব একটা ভালো হয় না বলার সঙ্গে সঙ্গে টেবিলের ওপর থেকে স্কেল নিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে দ্রুত স্কুল থেকে চলে যান।’
দুই বছর আগেও এ কে এম ফারুক একজন শিক্ষককে মাছিমপুর বাংলাবাজারে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক। পরে তিনি (সভাপতি) ক্ষমা চেয়ে পার পান বলেও জানান ওই শিক্ষক।
প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার বলেন, ‘কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটনাটি ঘটেছে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। এভাবে একজন শিক্ষকের ওপর হামলা দুঃখজনক।’
অভিযুক্ত এ কে এম ফারুক বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ জন্য আমি অনুতপ্ত। আমি তো মানুষ, ফেরেশতা নই। ভুল হতেই পারে। ঘটনার পরপরই বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষক বিল্লালের বাড়িতে গিয়েছি। কিন্তু কাউকে পাইনি। দয়া করে আপনারা বিষয়টি সমাধান করে দিন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে লেখালেখির দরকার নেই।’
উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’