দৈনিক শিক্ষাডটকম, নাটোর : নাটোর পুলিশের বিরুদ্ধে এক স্কুল শিক্ষককে পথরোধ করে মারধরসহ পকেটে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশের দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে যুক্ত করা হয়েছে।
রোববার বিকেল চারটার দিকে জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার ক্ষিদ্র মালঞ্চি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগকারী উপজেলার রহিমানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
প্রত্যাহার করা দুই পুলিশের কনসটেবলের নাম সজিব খান হোসেন এবং মো. আসাদুজ্জামান।
শিক্ষকের অভিযোগ, বিকেলে স্কুল ছুটির পর মোটরসাইকেলে নাটোর শহরের বাসায় ফেরার পথে ওই এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল সজিব, আসাদুজ্জামান এবং সোর্স বিদ্যুৎ পথরোধ করে এলোপাথাড়ি মারপিট করে।
এসময় দৌড়েপাশের একটি মাদরাসায় আশ্রয় নেন। মাদ্রাসার শিক্ষকরা এগিয়ে এলে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী এবং পুলিশের সোর্স পালিয়ে যায়। পরে দুই পুলিশ আমার কাছে মাদক আছে বলে দাবি করে। তল্লাশির এক পর্যায়ে তাদের কাছে থাকা দুইটা কাগজ দেখিয়ে বলে দুই পুরিয়া হেরোইন পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, এরপর হাতকড়া পরিয়ে মোটরসাইকেলে তোলে। থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পথে দুই হাজার টাকা দিলে ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু নগদ টাকা না থাকায় তারা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে দিতে বলে। এসময় আমার পকেটে থাকা ৪০০ টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে তারা বেশ কয়েকবার টাকার জন্য ফোন করেছে, কিন্তু আমি টাকা দেই নাই। শেষে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাটোর সদর হাসপাতালে এসে ভর্তি হই।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল আসাদুজ্জামান বলেন, গোপন খবরে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছিলাম। এর মধ্যেই বিদ্যুৎ এসে মারধর শুরু করে এবং ওই শিক্ষকের কাছে থেকে কাগজ বের করে বললো দুই পুরিয়া হেরোইন পাওয়া গেছে। আসলে কাগজ নাকি কোনো মাদক ছিলো তা জানি না। পরে কিছুদূর নিয়ে যাওয়া পর আরও দুই জন শিক্ষককে ছেড়ে দিতে বললে আমরা ছেড়ে দিয়ে চলে আসি। আর ওই কাগজ ওসির হাতে দিয়ে দিয়েছি।
বাগাতিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ নান্নু খান বলেন, ওই দুই পুলিশ কনস্টেবল কাউকে না জানিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে এসব ঘটিয়েছে। পুলিশ সদস্যরা কেন, কীভাবে সেখানে গেলো এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কনস্টেবল সজিব থানায় একটা পুরিয়া জমা দিয়েছে। তাতে হেরোইন আছে কিনা তা পরীক্ষা করে জানা যাবে।
নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সারমিনা লেনী বলেন, সোর্সের গোপন খবরে তল্লাশি করা হয়েছে। কিন্তু কোনো পুলিশ যদি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে থাকেন, তবে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সময় উদ্ধার হওয়া দুটি পুরিয়া পুলিশের হেফাজতে আছে। তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।