রংপুরের বেগম রোকেশিক্ষকদের কর্ম বিরতিতে দুর্ভোগে বেরোবি শিক্ষার্থীরায়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। স্থবিরতা নেমে এসেছে নিয়মিত শিক্ষা-কার্যক্রমে। শিক্ষকরা আহ্বান না করায় শিক্ষার্থীরা হচ্ছে না কোন ক্লাস-পরীক্ষা। একাডেমিক ব্যস্ততার জায়গাগুলোতে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য দপ্তরেরও একই অবস্থা। এমনকি শিক্ষার্থীদের চলাচলের সকল পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার সকালে অ্যাকাডেমিক ভবনগুলো খুললেও দুপুর ১২ টা পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থীকে দেখা যায়নি। অধিকাংশ শ্রেণীকক্ষ ও পরীক্ষা কক্ষগুলো তালাবদ্ধ রয়েছে। কর্মচারীরা আসলেও তারা অলস সময় পার করছেন।
জানা যায়, ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশের দীর্ঘ ছুটির পর আবারো ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
রাকিবুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, গত সপ্তাহে আমি দক্ষিণবঙ্গ থেকে এসেছি। ভালোভাবে ক্লাস শুরু না হতেই আবারো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আগে জানলে এখনে আসতাম না।
জোবায়ের হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। আজকে পরীক্ষা ছিল স্থগিত হয়েছে। কবে যে আবার পরীক্ষা হবে? পরীক্ষার মাঝে এ অনিশ্চয়তা ভালো লাগে না।
সোনিয়া নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, একদিকে রংপুরে অটো ভাড়া বাড়িয়েছে অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসও বন্ধ রয়েছে। টিউশন সহ অন্যান্য কাজের জন্য বাইরে যেতে তাই অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
নাইমুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনেক চেষ্টার ফলে আমাদের ক্যাম্পাস সেশনজট মুক্ত হয়েছে। এ আন্দোলন দীর্ঘ্য মেয়াদি হলে আবারো সেশনজটে পরতে পারে শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে আজ থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। এ কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বেরোবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, গত ১৩ মার্চ ২০২৪ তারিখ জারিকৃত ‘প্রত্যয় স্কিম’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার প্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন কার্যকর না হওয়ায় পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত বেরোবিতে সকল ক্লাস, পরীক্ষা, সমন্বয় সভা, ভর্তি কার্যক্রম ও প্রভোস্ট অফিস বন্ধ থাকবে।
বেরোবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড.বিজন মোহন চাকী বলেন, শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে শিক্ষার্থীদের সাময়িক অসুবিধা হলেও সার্বিকভাবে এটা মঙ্গলজনক। এতে যদি শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পরে তাহলে করোনাকালীন সময়ের মতো কয়েক মাসে সেমিস্টার শেষ করে পুষিয়ে দেয়া হবে।