দৈনিক শিক্ষাডটকম, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) : প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমানের দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অনুপস্থিতি, অসদাচরণ, অর্থ আত্মসাত, যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠলেও এর সুষ্ঠু তদন্ত না করে উল্টো অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের পক্ষে সাফাই গাইলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সালেহ্ সরকার। খেরুয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হওয়ায় তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের দোষ দিচ্ছেন এবং বেয়াদব বলেও গালি দেন। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মসিহুর রহমানের বিষয়ে সাক্ষাৎকারকালে শিক্ষকদের নিয়ে এ মন্তব্য করেন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) আবু সালেহ্ সরকার।
এ ছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তা আরো বলেন, মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করায় সহকারী শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মহাপরিচালকের কাছে পাঠাবেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিক, আলমগীর হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে সঠিক তদন্ত না করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানানো কথা বলছেন। কারণ শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকের গভীর সখ্যতা রয়েছে বলে এসব বলছে। প্রধান শিক্ষকের নানা অভিযোগের বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, সচেতন নাগরিক সমাজ বিদ্যালয় মাঠে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা করেছিলো। এ মানববন্ধনে আমরা অংশগ্রহণ করিনি। তবে সাংবাদিকরা এ ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে আমরা বক্তব্য দিয়েছিলাম। শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের বেয়াদব বলায় আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা সর্ম্পকে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মসিহুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক হিসেবে সবসময় বিদ্যালয়ের নানা কাজে কর্মকর্তাদের সাথে চলতে হয়। কে কি বলছে তা আমার জানার বিষয় নয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষকদের ‘বেয়াদব’ বলা ঠিক করেননি তিনি (শিক্ষা কর্মকর্তা)।
সার্বিক বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও) মো. নবেজ উদ্দিন সরকার জানান, তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগীরই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয় নিয়ে তদন্ত করতে যাওয়া হবে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মন্তব্যের বিষয়টি দুঃখজনক। শিক্ষকদের নিয়ে এমন মন্তব্য করা মোটেই ঠিক করেননি। এজন্য এ কর্মকর্তাকে সর্তক করা হবে।