রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষক–কর্মচারীদের অনেকেই নির্ধারিত সময়ের পরে (বিলম্বে) কলেজে আসছেন। উপরিমহলে আত্মীয়-স্বজন থাকায় কলেজের নিয়মনীতি মানতে চান না অনেক মহিলা শিক্ষক। তাই নিয়ম মানতে বাধ্য করার অংশ হিসেবে তাদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বুধবার কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। বারবার সতর্ক করার পরও অনেকে দেরি করে কলেজে আসায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কলেজ সূত্রে জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা কোনো মাসে সাত দিন দেরিতে আসবেন তাদের এক দিনের বেতন কাটা হবে। আর ৭ থেকে ১০ দিন দেরিতে এলে ২ দিনের, ১১ থেকে ১৪ দিন হলে ৩ দিনের এবং ১৫ দিনের বেশি দেরি করে উপস্থিত হলে ৭ দিনের বেতন কাটা হবে।
লালমাটিয়া মহিলা কলেজ একসময় বেসরকারি ছিল। সম্প্রতি কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়েছে, মানে সরকারি হয়েছে। তবে শিক্ষক-কর্মচারীরা এখনো সরকারি হতে পারেননি। দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় কাজটি হয়। তবে সরকারি হওয়ার (আত্তীকরণ) আগপর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারী কলেজ থেকে বেতন পাচ্ছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কলেজের যেসব শিক্ষকের ক্লাস সকাল সোয়া ৮টায়, তাদের যথাসময়ে কলেজে উপস্থিত হয়ে ক্লাস নিতে হবে। তবে সোয়া ৮টায় ক্লাস না থাকলেও সব শিক্ষককে বাধ্যতামূলক আগের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল ৯টার মধ্যে উপস্থিত হতে হবে; যা ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।
গত ফেব্রুয়ারিতে আবার এই নোটিশ দেওয়া হয়। একইভাবে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাড়ে ৮টায় এবং বিভাগের কর্মচারীদের সকাল ৮টার মধ্যে উপস্থিত হতে হবে।
ইতোমধ্যে যেসব শিক্ষক দেরিতে কলেজে উপস্থিত হয়েছেন, তাদের সতর্ক বা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও ডিজিটাল যন্ত্রের হাজিরায় দেখা যাচ্ছে, অনেকেই দেরিতে কলেজে আসছেন। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের ও দুঃখজনক। এ জন্য ১১ সেপ্টেম্বর একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে দেরি করে কলেজে এলে বেতন কাটার ওই সিদ্ধান্ত হয়। নির্ধারিত সময়ের পর কলেজে উপস্থিত হলে উল্লেখিত নিয়মে বেতন কাটা হবে। আর দেরিতে কলেজে আসা দায়িত্ব অবহেলার শামিল বলে গণ্য হবে। এ সিদ্ধান্ত একাডেমিক কমিটির সভার তারিখ, অর্থাৎ ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি মূলত সতর্কতার জন্য করা হয়েছে।
অপর সুত্রে জানা যায়, কলেজের কয়েকজন নারী শিক্ষক কলেজটি যাতে সরকারি না হয় সেজন্য নানা ফন্দিফিকির করছেন। সরকারি হলে তাদের ইচ্ছেমতো যাওয়া আসা বন্ধ হবে এবং কঠোর নিয়মনীতি মানতে হবে। কলেজটির বিরুদ্ধে কতিপয় নামধারী মিডিয়া ব্যবহার করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচারও চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।