শিক্ষকের কোচিংয়ে ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের কোচিংয়ে ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পাবনা |

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে বেত দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীর বাবা। গত বৃহস্পতিবার পৌর শহরের দরিনারিচা রহমান কলোনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পৌর শহরের সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত খণ্ডকালীন শিক্ষক উত্তম কুমার দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

শিক্ষার্থী রাফসান পৌর শহরের শহীদ আমিনপাড়া এলাকার রকিবুল ইসলাম রকিবের ছেলে ও সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

রাফসানের বাবা রকিবুল ইসলাম বলেন, সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মজুমদার ও খণ্ডকালীন শিক্ষক উত্তম কুমার দাস পৌর শহরের রহমান কলোনীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার খুলেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ার সময় শিক্ষক উত্তম কুমার শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আজ আমার মাথা ঠিক নেই, কথা বললে মার দিবো।’ এসময় রাফসান বলে, আপনিতো স্যার সবসময় মারেন। এখনতো আপনার বেত ভাঙা। কী দিয়ে মারবেন।

এ কথা শোনার পর শিক্ষক উত্তম কুমার সব শিক্ষার্থীকে বলেন আজ তোদের ‘একটি ম্যাজিক দেখাবো’ এ কথা বলেই ঘরের ভেতর থেকে বেত বের করে এনে রাফসানকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এ সময় রাফসান বেঞ্চ থেকে পড়ে গেলে সেখানেও পেটাতে পেটাতে রক্তাক্ত করেন। এক পর্যায়ে রাফসান অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে তুলে বেঞ্চে শুইয়ে দেন। জ্ঞান ফেরার পর রাফসান বাড়িতে এলে তাকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

রকিবুল ইসলাম আরো বলেন, সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মজুমদার অভিভাবকদের বিভিন্ন সময় বলেন, আপনাদের সন্তানদের উত্তম কুমারের কাছে প্রাইভেট পড়তে দিন। সে ভালো পড়াতে পারে। তার কাছে প্রাইভেট পড়লে ফলাফল ভালো করবে। প্রধান শিক্ষকের কথামতো সেখানে প্রাইভেট পড়তে দিয়েছিলাম। প্রধান শিক্ষক আত্মীয়তার সুবাদে অবৈধভাবে উত্তম কুমারকে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। ঈশ্বরদী উপজেলার অন্য কোনো সরকারি স্কুলে এ ধরনের খণ্ডকালীন শিক্ষক নেই।

রাফসানের মা ফরিদা পারভীন বলেন, রাফসানের জামা খুলে দেখি, বেতের প্রহারে পিঠ রক্তাক্ত হয়ে গেছে। তাকে তাৎক্ষণিক ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার ও উত্তম কুমার একসঙ্গে কোচিং খুলেছেন। এর আগেই প্রধান শিক্ষককে আমি বলেছিলাম স্যার আমার ছেলেটি একটু অসুস্থ ও মেধা শক্তি কম। তার দিকে খেয়াল রাখবেন। স্যার বলেছিলেন, ‘মেধা নেই পড়ানোর দরকার কী? অন্যকাজে লাগিয়ে দিতে হবে।’

ঈশ্বরদী সাউথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমারের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। খণ্ডকালীন শিক্ষক উত্তম কুমারের মোবাইলও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরদী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার জহুরুল ইসলাম বলেন, একদিন সাউথ স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসে ওই শিক্ষককে পাই। তাকে জিজ্ঞাসা করি, আপনি কে? স্কুলে কী? তখন তিনি বলেন যে, শখ করে ক্লাস নিচ্ছে। আমি তাকে তাৎক্ষণিক ক্লাস থেকে বের করে দিই এবং আর কখনো ক্লাস নিতে নিষেধ করি। এমনকি প্রধান শিক্ষক প্রদীপ কুমার মজুমদারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন অনুমতি না নিয়েই ক্লাসে ঢুকেছে সে ফ্রিতে ক্লাস নেয়, সময় কাটায়। প্রধান শিক্ষককে বলে দিই, সে যেন কখনো ক্লাসে না ঢোকে।

তিনি আরো জানান, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের বিধান নাই। এছাড়া এ স্কুলে শিক্ষকের কোনো শূন্যপদ নেই। সুতরাং খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগের কোনো প্রয়োজনও নেই।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আহত শিশুর বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066640377044678