কাজিপুরে রুহুল আমিন বাবলু নামে এক স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেছে তার মাসহ ভাই-বোন। পৈত্রিক সম্পত্তিতে পাঁচ ভাই-বোনকে আসতে না দিয়ে জোরপূর্বক ভোগদখল, হামলা-মামলাসহ নানা নির্যাতনের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) উপজেলার যমুনা নদী অধ্যুষিত দুর্গম চরাঞ্চল নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিগ্রি দোরতা গ্রামে এ মানববন্ধবন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ডিগ্রি দোরতা গ্রামের মৃত আলী আজমের পরিবার ও তার বংশের লোকজন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন তার স্ত্রী লাইলী বেগম, ছেলে নুরুল আমিন বাহাদুর, রাশেদুল ইসলাম বাচ্চু, মনিরুজ্জামান মনি ও শেখ রাশেদ মঞ্জু, স্থানীয় মুরুব্বি শাহজাহান আলী, সোলাইমান হোসেন প্রমুখ।
মৃত আলী আজমের ছেলে নুরুল আমিন বাহাদুর বলেন, বাবার সম্পত্তি আমার ভাই রুহুল আমিন বাবলু মাস্টার অন্যান্য ভাইবোনদের না দিয়ে জোর করে ভোগদখল করে খাচ্ছেন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিক বিচার হলেও তিনি বিচার মানে না।
বাহাদুরের ভাই রাশেদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, আমার ভাই বাবলু মাস্টার বাবার সম্পত্তিতে ঘর তুলতে দিচ্ছেন না। আবার চাচা মোয়াজ্জেম হোসেনও জমি দেওয়ার কথা বলে ৯ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েও দিচ্ছেন না। এলাকায় এলে বাবলু মাস্টার আমাদের মেরে অস্তিত্ব রাখবে না বলে হুমকি দেন। দফায় দফায় মারপিট করে আমাকে ও আমার ভাইদের আহত করেছেন। আমরা মামলা করলেও ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। উপরন্তু প্রভাব খাটিয়ে আমাদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। ভয়ে কেউ বাড়িতে আসতে পারছে না। বাবার সম্পত্তিতে বাড়ি করতে আসলে বাবলু মাস্টার অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলে নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নেও আমাদের বাড়ি করতে দেবেন না।
মেজ ভাইয়ের ওপর গুরুতর অভিযোগ তোলেন বাবলু মাস্টারের ছোট বোন রাশেদা বেগম। তিনি বলেন, আমার ভাই আমার সংসার ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন।
বাহাদুর-বাচ্চু ও রাশেদার মা লাইলী বেগম বলেন, বাবলু আমার মেজ ছেলে। অথচ সে আমাকেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। বাকি ছেলেমেয়েদের এলাকায় আসতে দেয় না। আমি এসবের বিচার চাই।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে রুহুল আমিন বাবলু মাস্টার বলেন, আমাদের বাবার সম্পত্তি পতিত রয়েছে। আমি ভোগদখল করি নাই। আমার ভাইয়েরা সব মিথ্যা বলেছে।
নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়রুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানি। সমস্যার সমাধানের চেষ্টা আগেও করেছিলাম, হয়নি। আগামীতেও আমরা চেষ্টা করবো।
মানববন্ধনে কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার দত্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তাদের ভাষ্য, এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও ওসি কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আসামিদেরও গ্রেপ্তার করেননি। ওসি বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। উনারা গত চার মাসেও আমার কাছে আসেননি। তারপরও মামলা যেহেতু আছে আমি ব্যবস্থা নেব।