শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি |

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের আল-আমিন দাখিল মাদরাসার শরীরচর্চা শিক্ষক হারুনুর রশিদ হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার মাদরাসায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে তিনি হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

এ ঘটনায় শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার কয়েকজন ছাত্রী ও অভিভাবক মাদরাসা সুপারের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। 

তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শরীরচর্চা শিক্ষক হারুনুর রশিদ হারুন ছাত্রীদের জড়িয়ে ধরা, ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থান নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলা, ছাত্রীরা দুষ্টামি করলে ছাত্র দ্বারা ছাত্রীদের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ানো এবং চুমু খাবার নিদের্শ দিয়েছেন। গত রোববার পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর শরীর নিয়ে অশ্লীল কথাবার্তা বলে বিভিন্নভাবে তাকে হয়রানি করলে ঘটনাটি শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর শুরু হয় ওই শিক্ষককে নিয়ে নানা সমালোচনা।  

হয়রানির শিকার পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী জানান, রোববার ক্লাসে এক ছাত্র আমাকে খুব বিরক্ত করছিলো। এ সময় আমি তাকে বারবার নিষেধ করার পরেও সে বিরক্ত করা ছাড়ছিলো না। তাই আমি তার এক হাত মুচরে ধরি। এ সময় শিক্ষক হারুন এসে আমাকে বকাঝকা শুরু করেন। একপর্যায়ে ওই শিক্ষক আমার শরীরের স্পর্শকাতর স্থান নিয়ে অশ্লীল কথা বলে এবং ওই ছাত্রকে আমার ওড়নার ভেতরে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে বলেন। পরে আমি বিষয়টি মাদরাসার আয়া ও ম্যাডামকে জানাই। বাড়ি গিয়ে পরিবারকেও জানায়। এরপর ঘটনার বিচার চেয়ে সোমবার সুপারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি।

পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরেক ছাত্রী বলেন, শিক্ষক হারুন বেশ কিছুদিন থেকে আমাকেসহ অনেক ছাত্রীদের অশ্লীল কথাবার্তা বলা, জড়িয়ে ধরা, শরীরের বিভিন্ন ষ্পর্শকাতর স্থান নিয়ে ব্যাঙ্গ করে মন্তব্য করাসহ নানাভাবে হয়রানি করেন। যে কারণে আমরা তার ক্লাস করতে খুব ভয় পাই। এতদিন আমরা লজ্জায় বিষয়গুলো কাউকে বলতে পারিনি। রোববার আমার এক সহপাঠীর সঙ্গে ঘটনা ঘটলে আমরা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছি। এরপর বিষয়টি শিক্ষকসহ অভিভাবকদের জানিয়েছি। আমরা ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর মা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার মেয়ে মাদরাসা থেকে বাড়িতে এসে বিষয়টি আমাকে জানান। লোক লজ্জার ভয়ে আমরা কাউকে বলতে চাইনি। কিন্তু ঘটনাটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, একজন শিক্ষক যদি ছাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা কি শিখবে। মাদরাসায় এসব ঘটনা বন্ধ করাসহ ওই শিক্ষকের ব্যবস্থা হওয়া দরকার। 

অভিযুক্ত শিক্ষক হারুনুর রশিদ হারুন সব অভিযোগ অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি কোনো ছাত্রীকে হয়রানি করিনি। আমি প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছি। তিনি দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের স্নেহের মাধ্যমে শাসন করেছি। ওই ছাত্রী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছেন সেটি সঠিক নয়। তিনি আরো বলেন, ওই মেয়েটির মাথায় সমস্যা আছে। আর তার কথা শুনে আমার প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে।

রাণীনগর আল-আমিন দাখিল মাদরাসার সুপার শরিফ উদ্দীন মাজহারি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীসহ কয়েকজন ছাত্রী এবং অভিভাবক সহকারী শিক্ষক হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ বেশ কিছু অভিযোগ মৌখিকভাবে দিয়েছেন। বিষয়টি মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটিসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আল-আমিন মাদরাসায় ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করার বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030150413513184