বগুড়ার আমতলীতে মাদ্রাসার ১০ ছাত্রীকে মারধর ও মলমূত্র খাইয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় অসুস্থ তিন ছাত্রীকে গতকাল সোমবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে রোববার মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দিয়েছেন এক অভিভাবক।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার মাদানীনগর জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুর রশিদ, তাঁর স্ত্রী শিক্ষক তাসলিমা বেগম এবং তাঁদের ছেলে তাইয়েবা ও মেয়ে নুসরাত গত শুক্রবার রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর ওই নির্যাতন চালান।
অভিযোগ স্বীকার করে আব্দুর রশিদ বলেছেন, ‘মোবাইলে আমার মেয়ে নুসরাতের ছবি তোলায় বিচার করেছি এবং ওই ছাত্রীদের মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী, তাদের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, মাদানীনগর জামিয়া সাইয়েদা ফাতিমা বালিকা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক তাসলিমা বেগমের মেয়ে নুসরাত গত শুক্রবার
অভিযোগ করে, মাদ্রাসার এক ছাত্রী মোবাইলে তার ছবি তুলেছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই ১০ ছাত্রীর বিচারে বসেন শিক্ষক তাসলিমা। একপর্যায়ে তাসলিমা, তাঁর স্বামী আব্দুর রশিদ, ছেলে তাইয়েবা ও মেয়ে নুসরাত ওই ছাত্রীদের মারধর করেন এবং মলমূত্র,
ড্রেনের পচা পানি ও হাঁসের মল বালতিতে মিশিয়ে জোরপূর্বক খাইয়ে দেন। এতে ওই ১০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। শনিবার সকালে তাদের ভর্তি বাতিল করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্রীরা বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের ঘটনাটি জানায়। সোমবার অসুস্থ তিন ছাত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে পরিবার। এর আগে রোববার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শিক্ষক তাসলিমাসহ চারজনের বিরুদ্ধে ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন শিক্ষার্থী বলেছে, ‘মোবাইলে ছবি তোলার মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের মারধর করেছে, মলমূত্র, ড্রেনের পচা পানি ও হাঁসের মল বালতিতে মিশিয়ে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে।’
এ বিষয়ে আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) রণজিৎ কুমার সরকার বলেন, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমতলীর ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’