সময়টা ১৯৯৫। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয় ঢাকাসহ সারাদেশের সরকারি কলেজগুলোতে অধ্যক্ষ ও অধ্যাপকদের পদায়ন/বদলির ক্ষমতা। বছর বছর আরো কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মাঠ প্রশাসনের বড় বড় পদগুলোতে বদলি ও পদায়ন ক্ষমতা। ইতিমধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আলাদা হয়েছে মাদরাসা ও কারিগরি অধিদপ্তর। মাধ্যমিক শিক্ষার আলাদা অধিদপ্তরের দাবি প্রবল হচ্ছে। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের ভাষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর “প্রায় ঠুঁটো জগন্নাথ”। ঢাকা শহরের সরকারি কলেজগুলোর প্রভাষক বদলিরও ক্ষমতা নেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের। এ তো গেলো কলেজের খবর।
মাধ্যমিকের আঞ্চলিক উপ-পরিচালকের বদলি/পদায়ন ক্ষমতাও কেড়ে নেয়া হয়েছে বহু আগে। সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক/জেলা শিক্ষা অফিসার সমমানের জনবল দিয়ে চালানো হয় আঞ্চলিক ডিডির পদগুলো। তাদের বদলির ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের হাতে। ফলে মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বা কলেজ ও মাধ্যমিক পরিচালকদের খুব কম পাত্তা দেন ডিডিরা। এখন অধিদপ্তরের হাতে আছে শুধু জেলা-উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও সরকারি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। যদিও ‘ভালো স্টেশন’ হিসেবে পরিচিত জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষার পদগুলোতে বদলিতেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মৌখিক বা এসএমএস নির্দেশনার কালচার বহুবছরের।
এরই মধ্যে আজ সোমবার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বসছে ‘সরকারি মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক/কর্মকর্তা বদলি নীতিমালা -২০২৪’ এর খসড়া চূড়ান্তকরণ সভা। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত থাকবেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, অধিদপ্তরের কলেজ ও মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালকদ্বয়, মাধ্যমিকের একজন উপপরিচালক ও ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের বর্তমান ও সাবেক একাধিক কর্মকর্তা বলেন অধিদপ্তরকে পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথ বানানোর আয়োজন। একটা ক্যাডারের ওপর আরেকটা ক্যাডারের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ, যা চরম বৈষম্যের নামান্তর। শিক্ষার মাঠ প্রশাসনের ভারসাম্য নষ্টের চূড়ান্ত আয়োজন।