পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(পবিপ্রবি) কীটতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানকে পরীক্ষার সময়ে কক্ষে তালা মেরে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবারের এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগরকে দায়ী করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. হেমায়েত জাহান। এ ঘটনার প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন এবং অর্ধ- দিবস ক্লাস-পরিক্ষা বর্জন করেছে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি অনুষদ ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতির ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শিক্ষক নেতারা। প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার অর্ধ কার্যদিবস সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তির আওতায় না আনলে কঠোর কর্মসূচীতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
মানববন্ধনে পবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান মিয়া (মুন্না) বলেন, অর্ধ কার্যদিবস ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করেছি। কালকে থেকে স্বাভাবিকভাবে আমাদের কর্মসূচি চলবে এবং ক্লাস-পরিক্ষা চলবে। প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে ৫ দিন সময় দেবো।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জেহাদ পারভেজ বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কাম্য নয়। এ ধরনের ঘটনা যেনো আর না ঘটে সে জন্য ধারাবাহিকভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি হাতে নেবো।
জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. হেমায়েত জাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, পবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর ঘটনার আগে আমার কাছে এসে সিনথি কানিজ ফারহান নামের এক ছাত্রীকে পাস করিয়ে দিতে জোর করে। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন আইন নেই সাগর যা বলবে ঐটাই আইন। এ বেআইনি দাবি না মানায় রুমে তালা দেয়ার মূল কারণ হিসেবে আমি ধারণা করছি। এছাড়া কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউট্যাবের কমিটির হয়েছে যার সাধারণ সম্পাদক আমি। এ জন্যও রুমে তালা দিলেও দিতে পারে।
অভিযোগের বিষয়ে পবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাত ইসলাম খান সাগর বলেন, পবিপ্রবির সাদা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ইউট্যাবর বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অদ্যাপক হেমায়েত জাহান আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে ষড়যন্ত্র করেছে। তিনি আরো বলেন, ঐ শিক্ষকের সাথে তার রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হওয়ায় ঐ শিক্ষক তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দিয়েছেন।"
জানা যায়, ১৪ আগস্ট ২০২৩ খ্রি. তারিখ দুপুর ২ টা ৪০ মিনিটে ইউট্যাবের সাধারণ সম্পাদক ও কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম হেমায়েত জাহানকে অফিস কক্ষে কর্তব্যরত অবস্থায় বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মুঠোফোনে খবর পেয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কর্মচারীরা তালা ভেঙে ওই শিক্ষককে মুক্ত করেন।