শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা: পাঁচ মিনিটেই কেন্দ্রের বাইরে যায় প্রশ্ন - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা: পাঁচ মিনিটেই কেন্দ্রের বাইরে যায় প্রশ্ন

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রথম ধাপের পরীক্ষায় জালিয়াত চক্রের সঙ্গে যোগসাজশে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অনেকে নকল করে পরীক্ষায় পাসের চেষ্টা চালিয়েছেন। জনপ্রতি ১০-১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হওয়ার ছক কষেছিলেন তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী পরীক্ষা শুরুর ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নপত্র চলে যায় কেন্দ্রের বাইরে। এর পর একটি চক্র দ্রুত প্রশ্নপত্রের সমাধান করে কেন্দ্রের ভেতরে পরীক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেয়। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান ও পরীক্ষা ব্যবস্থাপনায় যুক্তদের প্রচেষ্টায় তাদের সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতিতে জড়িত চক্রের ১৩ সদস্য, পরীক্ষার্থীসহ ১২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতি : প্রথম ধাপে গ্রেফতার ১২৪

শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চক্রটি ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে। দ্রুত বাইরে প্রশ্ন পাঠাতে চক্রকে পরীক্ষা কেন্দ্রের কোনো কর্মচারী বা শিক্ষক সহায়তা করতেন। আবার কোনো পরীক্ষার্থীও প্রশ্ন পাঠিয়েছেন। পরে বাইরে থেকে ডিভাইসের মাধ্যমে উত্তর পাঠানো হতো। ব্লুটুথের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর কানের সঙ্গে যুক্ত থাকত সেই ডিভাইস। আর সেটির সঙ্গে বাইরের চক্রও যুক্ত থাকত। তারা প্রশ্ন পেয়ে উত্তর তৈরির পর ডিভাইসে কল দিয়ে পড়ে শোনাত। পরীক্ষার্থীর ডিভাইসে কল স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিসিভ হতো। হলে থাকা পরীক্ষার্থীরা তা শুনে উত্তর লিখত। বাইরে যারা থাকেন তাদের কাজ হলো, প্রশ্ন সমাধানকারীদের কাছে পৌঁছানো, সমাধান করে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য পরীক্ষা শুরুর আগে বেশ কিছু কাজ ঠিক করে রাখা হতো। এগুলোর মধ্যে রয়েছে– সমাধানকারী খুঁজে বের করা, ফটোকপির জন্য দোকান ঠিক করা, যেখানে বসে প্রশ্নপত্র সমাধান করা হবে, তেমন একটি নিরাপদ স্থান ঠিক করা।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, একটি অসাধু চক্র মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অনৈতিক উপায়ে পরীক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বলে গোয়েন্দা তথ্য ছিল।

এর ভিত্তিতে চক্রটিকে শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছিল র‍্যাব। এক পর্যায়ে গতকাল পরীক্ষা চলাকালে অভিনব উপায়ে মাস্টারকার্ডের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস যুক্ত করে নকল প্রক্রিয়ায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৪টি ইলেকট্রনিক ডিভাইসযুক্ত মাস্টারকার্ড, ২০টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ১৭টি মোবাইল ফোন, ব্যাংক চেক ও স্ট্যাম্প জব্দ করে র‍্যাব।

গাইবান্ধায় র‍্যাবে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে এসেছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের ইলেকট্রনিক ডিভাইসে প্রশ্নপত্র আসার তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে চক্রটি কাজ করেছে। কেন্দ্রে নিয়োজিত শিক্ষক, কর্মচারী ও পরীক্ষার্থীদের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র বাইরে আসে। কেন্দ্রের বাইরে একটি বিশেষজ্ঞ টিম রয়েছে, যারা দ্রুত প্রশ্নের উত্তরের অনুলিপি ডিভাইসের মাধ্যমে কেন্দ্রের ভেতরে পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেয়।

র‍্যাব সূত্র জানায়, প্রশ্নপত্র পরীক্ষা শুরুর পর, নাকি আগেই ফাঁস হচ্ছে– তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, হলে প্রশ্নপত্র বিতরণের সঙ্গে সঙ্গেই পরীক্ষার্থীদের কেউ ডিভাইসের মাধ্যমে তা চক্রের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছে। পরে ফাঁস হওয়া সেই প্রশ্ন জালিয়াত চক্রের ‘এক্সপার্ট গ্রুপ’ স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধান করে আবার চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। টাকার বিনিময়ে এই অনৈতিক প্রক্রিয়ায় কাদের পাস করানো হবে, তা আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। এ জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেওয়া হয়। গাইবান্ধায় গ্রেফতার ররা জানিয়েছে, তারা চক্রের আরেক ধাপের সদস্যদের কাছ থেকে প্রশ্নপত্রটি পেয়েছে।

সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ - dainik shiksha সিটি কর্পোরেশন এলাকাভূক্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা - dainik shiksha দেশের সব ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশনা সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ - dainik shiksha সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজসমূহ অনির্দিষ্টকাল বন্ধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা স্থগিত আতঙ্কে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha আতঙ্কে হল ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় মিলেছে - dainik shiksha ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে নিহত শিক্ষার্থীর পরিচয় মিলেছে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.005856990814209