শিক্ষক নেই, তাই ক্লাস নিচ্ছেন অভিভাবক - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষক নেই, তাই ক্লাস নিচ্ছেন অভিভাবক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ক্লাসে পড়াচ্ছেন অলিকা দাশ। কিন্তু তিনি বিদ্যালয়টির শিক্ষক নন। অলিকা ওই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর বোন। শিক্ষক না থাকায় তাকে পড়াতে হচ্ছে।

কেবল তিনি নন, বিদ্যালয়টিতে এক সপ্তাহ ধরে পড়াচ্ছেন পাঁচজন অভিভাবক। হবিগঞ্জ প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সংলগ্ন পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে গত বুধবার পর্যন্ত এমন চিত্র ছিল।

তবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলা গতকাল রাতে টেলিফোনে জানান, বিদ্যালয়টিতে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের কেউ কেউ বৃহস্পতিবার যোগ দিতে পারেন।

বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫০। ১ জানুয়ারি তারা নতুন বই পেয়েছে। পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের পাঠদান চলে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংযুক্তির মাধ্যমে। কিন্তু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ১৫ ডিসেম্বর এই সংযুক্তির আদেশ বাতিল করে। এতে প্রতিষ্ঠানটির পাঁচজন শিক্ষক নিজ নিজ বিদ্যালয়ে ফিরে গেছেন। এমন অবস্থায় বছরের শুরুতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান ঝুঁকিতে পড়ে। এ জন্য হবিগঞ্জ পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট মো. শাহজাহান কবীরের অনুরোধে ৩ জানুয়ারি থেকে পাঁচজন অভিভাবক পাঠদান করছেন।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষণ বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে থাকে পিটিআই। প্রাথমিক স্তরের এ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ আছে পাঁচটি। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের সংযুক্তি দিয়ে এ কার্যক্রম চালানো হয়। পাশাপাশি যেসব শিক্ষক পিটিআইয়ে ‘ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন কোর্স’ করতে আসেন, তাদের মধ্য থেকেও কয়েকজনকে অতিথি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এই কোর্সের মেয়াদ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যদিও নতুন কোর্স এখনো শুরু হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জ পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট (চলতি দায়িত্ব) মো. শাহজাহান কবীর জেলা শিক্ষা অফিসের সহায়তা চেয়ে চিঠি দেন। একই সঙ্গে পিটিআই পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের সহায়তা চান তিনি। তার আহ্বানে অভিভাবকরা সাড়া দেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের ইনস্ট্রাক্টর, কম্পিউটার অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের মধ্য থেকে আরও পাঁচজনকে অতিথি শিক্ষকতার দায়িত্ব দেন শাহজাহান কবীর। এখন এভাবে চলছে ওই বিদ্যালয়ের নতুন বছরের কার্যক্রম।

গত রোববার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন তানজিনা আখতার নামের একজন অভিভাবক। তিনি বলেন, একসময় নারায়ণগঞ্জ লক্ষ্মী কটন মিলস উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। 

এখন সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগছে। এভাবে হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা হবিগঞ্জ শহরের বাসিন্দা পার্ণা বণিক ও অলিকা দাশও পাঠদানের দায়িত্বে আছেন। তারা বলেন, শিশুদের ক্লাস নিতে ভালো লাগছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গতকালও অভিভাবকেরা বিদ্যালয়টিতে পাঠদান করিয়েছেন।

পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট মো. শাহজাহান কবীর বলেন, শিক্ষকসংকটের বিষয়ে তিনি গতকাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, রোববার নাগাদ তিনজন শিক্ষক যোগদান করতে পারেন।

ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে : শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে : শিক্ষামন্ত্রী ডিবির হাতে গ্রেফতার নাসিরই চালান শিক্ষার ঢাকা ডিডি অফিস! - dainik shiksha ডিবির হাতে গ্রেফতার নাসিরই চালান শিক্ষার ঢাকা ডিডি অফিস! শিক্ষাভবন যখন কর্মকর্তার নোট-গাইড বিক্রির দোকান - dainik shiksha শিক্ষাভবন যখন কর্মকর্তার নোট-গাইড বিক্রির দোকান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষমতা পেলো কারিগরি বোর্ড - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষমতা পেলো কারিগরি বোর্ড পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত সুপারিশ আগস্টে - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তির চূড়ান্ত সুপারিশ আগস্টে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে বুদ্ধিজীবী হ*ত্যায় জামায়াত কীভাবে জড়িত - dainik shiksha বুদ্ধিজীবী হ*ত্যায় জামায়াত কীভাবে জড়িত please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029010772705078