শিক্ষকরা শিক্ষাক্রমের ভালো-মন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করলে নতুন শিক্ষাক্রমের সমস্যাটা থাকবে না বলে মনে করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহফুজা খানম।
সম্প্রতি দৈনিক আমাদের বার্তাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আমাদের কোনো আমলেই শিক্ষকরা নতুন শিক্ষাক্রমকে সাদরে গ্রহণ করেননি, এবারও না । এর পেছনে কী কী কারণ থাকতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
জবাবে বিশ্ব শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, এটা খুব দুঃখজনক। শিক্ষকরা হচ্ছেন পথপ্রদর্শক। তারা যদি শিক্ষাক্রমের ভালো-মন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন, এবং তাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো যদি আমরা সেভাবে ইন্ট্রোডিউস করতে পারি, তাহলে আশা করি আমাদের শিক্ষাক্রমে সমস্যাটা থাকবে না।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে পরামর্শ চাইলে একুশে পদক পাওয়া এই শিক্ষাবিদ বলেন, গ্রামাঞ্চলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষকরা এক শিক্ষাক্রম থেকে আরেক শিক্ষাক্রমে আসছেন, তাদের প্রশিক্ষণটা অত্যন্ত প্রয়োজন। এই জরুরি প্রয়োজনটা যথার্থভাবে মেটাতে হবে। আমি যেনতেন প্রকারে প্রশিক্ষণটা দিয়ে শেষ করলাম তা না। একেবারে আমার কারিকুলাম যেনো ধারণ করে, লালন করে, পোষণ করে। এরপর যেনো তার শিক্ষার্থীদের দান করতে পারে, এটাই পরামর্শ।
ছাত্রজীবনের কথা স্মরণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের একমাত্র নারী ভিপি মাহফুজা খানম বলেন, কী কলেজ কী ইউনিভার্সিটি, প্রত্যেক জায়গায় প্রতিবছর ছাত্র সংসদ হতেই হবে, এর ভেতর দিয়ে নেতৃত্ব তৈরি হয়। এর ভেতর দিয়ে আমার ভেতরে শিক্ষা, শিক্ষার তো অনেকগুলো পার্ট আছে। শুধু পুঁথিগত শিক্ষা নয়, এর বাইরে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তার মনজগৎকে আলোকিত করে। এ কাজগুলো এবং আমি মনে করি ছাত্র সংসদ হওয়া একান্ত প্রয়োজন।
অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ২৮ বছর ডাকসুর ইলেকশন ছিলো না। ২৮ বছর পর হলো একবার। তারপর আবার বন্ধ। এটাকে আমি বলবো, আমি অবশ্যই বলবো, আমাদের তরুণ-তরুণীদের যদি সত্যিকারের নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জন করতে হয়, এ সমস্ত ছাত্র সংসদের ভেতর দিয়ে তাদের নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, নানা কার্যক্রমের ভেতর দিয়ে, আমি মনে করি। আমি আবেদন করব এ সরকারের কাছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। সমস্ত বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের সময়ে ছাত্র সংসদ ছিলো। সেগুলোর ভেতর দিয়ে ষাটের দশকে তরুণরা যেভাবে একটা মহান মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিলো, তার ভিত্তিতে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। আমি মনে করি, ছাত্র সংসদ যদি গঠিত হয়, তার ভেতর দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীর মনোজগতে মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাসের প্রভাব বাড়বে। তাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠবে আগামী দিনের জন্য। তারাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করবে।
দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা এবং শিক্ষা বিষয়ক পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমি বলবো, সাধুবাদ জানাবো। শুধু শিক্ষা নিয়ে একটি পত্রিকা কাজ করছে। যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই পত্রিকাটি যাত্রা শুরু হয়েছিলো আমি তার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি। আমি মনে করি, অবশ্যই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার জন্য এই পত্রিকাটি বিশেষ ভূমিকা থাকবে। আর সেটা জাতি স্মরণ রাখবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।