শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করেও চূড়ান্ত লাইসেন্স পাচ্ছেন না বেশ কিছু প্রার্থী। একাডেমিক রেজাল্ট ভালো হলেও যেসব প্রার্থী এনটিআরসিএর ভাইভা বোর্ডে ঠিকভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না বা নিজেদের অতি-আত্মবিশ্বাসী জ্ঞান করে ভুল উত্তর দিচ্ছেন তারা বাদ পড়ছেন। রেজাল্ট ভালো হলেও ভাইভা বোর্ড অনেককেই শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকতার জন্য পাঠাতে নারাজ। আবার কারো কারো বিরুদ্ধে তদবিরের অভিযোগও উঠেছে।
যদিও ভাইভার জন্য ডাকপড়া মোট ২৬ হাজারের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, সারাদেশে তীব্র শিক্ষক সংকটের কারণে সবাইকেই লাইসেন্স দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভা চলছে। আগামী ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ভাইভা চলার কথা। আর ডিসেম্বরেই এ নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে চায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষক পদে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
এবার মোট আটটি ভাইভা বোর্ড গঠন করা হয়েছে। উত্তীর্ণরা এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। নিয়োগ পেলে তারা সরকারি কোষাগার এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকেও বেতন-ভাতা পাবেন। তাদের জন্য এমপিওখাতে সরকার মাসে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করে।
ভাইভা সংশ্লিষ্টরা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষকের প্রভাব অনেক। তবে ভাইভায় দেখা যাচ্ছে, শিক্ষক হতে চাওয়া বহু প্রার্থী আসছেন যারা বোর্ড এপ্রোচ করতে পারছেন না। কারো কারো উচ্চারণের মর্মোদ্ধার করা কঠিন। অথচ শ্রেণিকক্ষে প্রমিত উচ্চারণ শেখানো শিক্ষকের জন্য বাধ্যতামূলক। আবার অনেকে আছেন যারা অতিআত্মবিশ্বাসী। তারা ভুলভাল উত্তর দেন, কিন্তু বুঝতেই পারেন না ভুল বলছেন না ঠিক বলছেন। প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষা উত্তীর্ণ হলেও তারা ভাইভায় আটকে যাবেন। অনেকের বিরুদ্ধে তদবির করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদেরকেও অযোগ্য বিবেচনা করা হবে।
সম্প্রতি এসব নিয়ে কথা হয় এক ভাইভা বোর্ডের একজন প্রধানের সঙ্গে। দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভায় এলে `ইয়েস নো ডিসিশন' দেয়া হয়। তবে আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রার্থীদের পাচ্ছি যারা ভাইভা বোর্ডের সামনেই ঠিকভাবে কথা বলতে পারেন না। তারা ক্লাসে গিয়ে কি করবেন। অনেকে এতোটাই আত্মবিশ্বাসী যে, কি বলছেন তিনি নিজেই জানেন না। এ ধরনের প্রার্থী, যাদের শিক্ষক হওয়ার নূন্যতম যোগ্যতা নেই, তাদের বাদ দেয়া হচ্ছে।
এদিকে শিক্ষক নিবন্ধনের ভাইভায় অংশ নেয়া প্রার্থীরা শিক্ষক হওয়ার লাইসেন্স পেতে তদবির করছেন বলে জানা গেছে। তারা ভাইভা বোর্ড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি কলেজ শিক্ষক, এনটিআরসিএর কর্মকর্তাসহ অনেকের কাছেই তদবির করছেন।
জানা গেছে, সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) যে কোনো ধরনের ‘তদবির’ প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচনা করে। যা বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি ও আদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। তবে এনটিআরসিএর শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের কোনো ঘোষণা নেই। সম্প্রতি পিএসসির চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন বিসিএস পরীক্ষার জন্য তদবির করা প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলের চিন্তার কথা জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ১৬তম শিক্ষক নিবন্ধনেও ভাইভায় অংশ নেয়া দেড় হাজার প্রার্থী বাদ পড়েছিলেন। সেবার ভাইভা ফেস করছিলেন ২০ হাজার ১৩১ জন। আর চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন ১৮ হাজার ৫৫০ জন।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে শিক্ষক নিবন্ধনের স্কুল পর্যায়ের ইংরেজির ভাইভা শেষে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে এক প্রার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘আমাকে প্রথমে বললো, what are you? আমি প্রায় ৩-৪ মিনিট speaking করেছি। speaking শুনার পর ওনারা [ভাইভা বোর্ড] জানতে চাইলো what is verb? পরে ভার্বটা কিভাবে Identify করবো তা জানতে চেয়েছেন। আমার speaking শুনে তারা satisfy. আমি confidence.'
ইংরেজির ভাইভা দেয়া অপর এক প্রার্থী নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন,`I'm satisfied for your exam because it is the first time to my viva voce. So I'm very glad to my confidence. Lots of question in my viva board, actually or...for example principle verb, auxiliary or some literacy term. I am feel confidence, Thank you'
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।