ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষকদের হেনস্তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে ছাত্রীরা। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে ছাত্রীরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের কিছু যৌক্তিক সংস্কারের নামে নানান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষকদের হেনস্থা করা হচ্ছে। ছাত্রীদের একটি পক্ষ অভিযোগ তোলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফের প্রশ্রয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন মৃধা, সাইফুল ইসলাম, নাছিমা, বদরুন্নাহার, ফারজানা আক্তারসহ একাধিক শিক্ষক বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এছাড়া এসব শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে তারা পরীক্ষার সময় নম্বর কমিয়ে দেয়ার অভিযোগ ওঠে।
তবে সেটি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করছে মঙ্গলবার সকালে মানবনন্ধন করা ছাত্রীদের একাংশ। তার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের পড়ালেখার ধারাবাহিকতাকে নষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন অভিভাকরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের আন্দোলনটি ছিল কিছু সংস্কার উপলক্ষ্যে। তবে সেটি আন্দোলন পর্যন্ত থাকেনি। কিছু অতি উৎসাহী ছাত্রী ও অভিভাবক আন্দোলনের নামে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানহানি করেছে। এখন শিক্ষকরা ভয়ভীতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠাদান করাচ্ছেন। যে আন্দোলনে শিক্ষকদের সম্মানহানী করা হয়, হেনস্তা করা হয় সেটি কখনো যৌক্তিক হতে পারে না। যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার্থের আজ আমরা ছাত্রীরা একত্রিত হয়েছি। তাছাড়া প্রত্যাশা করছি যেসব ছাত্রী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের নিয়ে প্রশাসন তদন্ত করুক এবং শিক্ষকদের আবারও বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনা হোক।
বক্তব্য শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জড়ো হয়। এছাড়া জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষকদের মানহানির বিষয়টি তুলে ধরে। এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের সামনে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকদের ব্যক্ত উপস্থাপন করা হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন করছে আবার কেউবা পক্ষে করছে। আন্দোলনকে ঘিরে বিদ্যালয়ের পাঠদান স্থবির হয়ে পড়ছে। এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষকদের যদি কোনো ভুলত্রুটি থাকে সেটি কর্তৃপক্ষ দেখবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বিচার করার কোনো এখতিয়ার নেই। তদন্ত সাপেক্ষে কোনো শিক্ষকের অনিয়ম পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে। আবার যেসব শিক্ষার্থী বিষয়টিকে ভিন্নদিকে ধাবিত করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও কড়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।