মানুষ যা করে এবং যেভাবে করে তা থেকে যে ফল পায়, সব সময় যদি একই কাজ একইভাবে করে তাহলে একই ফল পেতে থাকবে। যদি আরও ভালো কিছু পেতে চায় তাহলে আরও উন্নত কাজ যথাযথ কৌশলে করতে হবে। এ কথাটি জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আদিযুগে গুহায় বসবাসকারী মানুষের বংশধর আজ বিলাসবহুল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অট্টালিকায় বসবাস করছে। সেই যুগে মানুষ মাথায় বা কাঁধে তুলে বোঝা স্বল্প দূরে বহন করত, আজ ট্রাকে, ট্রেনে বা কার্গো বিমানে টনে টনে মাল হাজার হাজার মাইল দূরে নিয়ে যাচ্ছে। তখন মানুষ হেঁটে বা পশু বাহনের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে খবরাখবর পাঠাত, আজ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে কথোপকথন করছে। পৃথিবীর এক প্রান্তে ঘটে যাওয়া খবর সারা দুনিয়ায় রটে যাচ্ছে তাৎক্ষণিক। মানুষের উদ্ভাবনী শক্তি প্রয়োগের ফলেই তা সম্ভব হচ্ছে। তাই উন্নয়নের জন্য চাই পরিবর্তন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও পরিবর্তন প্রয়োজন। এ পরিবর্তন হতে হবে উন্নয়নের জন্য। বিভিন্ন কারণে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এবং বৈশ্বিক চাহিদার দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। যুগোপযোগী মানবসম্পদ সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থাকেও যুগোপযোগী করা অত্যাবশ্যক। শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হচ্ছে- শিক্ষা দর্শন ও শিক্ষানীতি পুনর্নির্ধারণ, পরবর্তী করণীয় হচ্ছে শিক্ষানীতি অনুসারে শিক্ষাক্রম উন্নয়ন, শিক্ষাসামগ্রী প্রণয়ন, শিক্ষক প্রস্তুতিকরণ, শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন, শিখন কার্যক্রম, মেনটোরিং বা বিজ্ঞ পরামর্শ প্রদান ইত্যাদি। সোমবার (১৩ মে) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।
সম্পাদকীয়তে আরো জানা যায়, আলোচ্য প্রবন্ধে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষানীতির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে বিশ্লেষণাত্মক মতামত উপস্থাপন করা হচ্ছে। প্রবন্ধটি চারটি পর্বে প্রকাশিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা বহুমুখী। সাধারণ শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা, এনজিও পরিচালিত শিক্ষা, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ইত্যাদি। মাদরাসা শিক্ষা প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত- আলিয়া ও কওমি। তাছাড়া রয়েছে বর্তমানে গ্রাম-শহরে পাড়ার পাড়ায় গড়ে ওঠা অসংখ্য মাদরাসা, যেগুলোতে কী শিখাচ্ছে তার কোনো হদিস নেই। ইংরেজি মাধ্যমে স্কুল আবার দুই প্রকার- ইংরেজি ভার্সন যেখানে বাংলাদেশের জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসারে ইংরেজি মাধ্যমে শিখন কার্যক্রম পরিচালিত হয়, অন্যান্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুল বিভিন্ন দেশের শিক্ষাক্রম অনুকরণে পরিচালিত হয়। অধিকাংশ এনজিও স্কুল তাদের নিজস্ব শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে থাকে। সরকার নিয়ন্ত্রণের বাইরে বিভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থী তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষার গুণগত মানের তারতম্য অপরিসীম। যে কেউ ইচ্ছা করলে কিন্ডারগার্টেন বা মাদরাসা নাম দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালিত করতে পারে। কী পড়াবে, শিক্ষকের যোগ্যতা কী হবে, মাসিক ফি কত ইত্যাদি দেখা বা নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই। বাইরে স্বচ্ছ কিন্তু ভিতরে কুন্ডমতলব নিয়ে সন্ত্রাসী সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালিত করলেও দেখার কেউ নেই। সাধারণ মানুষের ধর্মীয় ভাবানুভূতি ব্যবহার করে শিক্ষার নামে ব্যবসা করার সুযোগ অনেকেই গ্রহণ করেছেন।
শিক্ষার প্রারম্ভিক স্তরগুলোতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শিক্ষাক্রম অনুসারে বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভিন্নমুখী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ফলে বহুমুখী প্রকট সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে-(ক) শিক্ষার গুণগত মানের ব্যাপক তারতম্য; (খ) দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনবোধ ও দেশাত্মবোধ ভিন্নতা, ফলে পরস্পরের প্রতি হেয় মনোভাব পোষণ; (গ) কর্মজীবনে সুযোগ লাভে তারতম্য। কারও অতি সীমিত, কারও কারও প্রশস্ত। মৌলিক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হলো- প্রকৃত মানুষ হিসেবে জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ অর্জন। তার জন্য প্রয়োজন ভাষার দক্ষতা, গাণিতিক হিসাবনিকাশ করার দক্ষতা ও নৈতিক গুণাবলি অর্জন। এক কথায় মৌলিক শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হলো জীবন দক্ষতা অর্জন। মৌলিক শিক্ষাজীবনের ভিত। এ ভিত যত শক্ত হবে জীবন তত মসৃণ হবে, পরবর্তী স্তরের শিক্ষা গ্রহণ এবং জীবনভর শিক্ষা লাভ তত সহজ হবে। বর্তমানে প্রচলিত পাঁচ বছরমেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে সুদৃঢ় মৌলিক শিক্ষা অর্জন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-সহ পূর্ববর্তী বেশ কয়েকটি শিক্ষানীতি রিপোর্টে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ বৃদ্ধি করে আট বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। সংস্কারমুক্ত উন্নত জাতি গঠন, উন্নয়নকে টেকসইকরণ এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখার উপযোগী জনশক্তি তৈরি করার পূর্বশর্ত হচ্ছে সবার জন্য একমুখী মৌলিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশ ঘাটতি-উদ্বৃত্ত সমস্যায় ভুগছে। উক্তিটি স্ববিরোধী মনে হলেও সত্যবর্জিত নয়। এ সমস্যার সৃষ্টি শিক্ষার ভ্রান্ত নীতির কারণে অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তির অভাব। আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা অনেকাংশে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারছে না। যেমন- গার্মেন্ট শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। এ খাত বাংলাদেশের উন্নয়নে, বিশেষ করে জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে সবিশেষ অবদান রাখছে। অথচ সাধারণ শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পায় অদক্ষ শ্রমিক, তাদের বেতন খুবই সীমিত। তাদের দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ শিখতে হয়। এ শিল্পে মধ্য পর্যায়ের কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন জনবল এ দেশে নেই বললেই চলে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এমন দক্ষতাসম্পন্ন জনবল তৈরি করে না। ফলে পার্শ্ববর্তী দেশ শ্রীলঙ্কা, ভারত, এমনকি নেপালের লোকজন বাংলাদেশে কাজ করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যায়। পায়রাবন্দর এলাকায় দেখা যায় প্রচুর চীনা নাগরিক, তারা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও অন্যান্য প্রজেক্টে কাজ করে।
এ দেশে বিভিন্ন স্থানে দক্ষতাসম্পন্ন প্রচুর কোরিয়ান টেকনেশিয়ান হিসেবে কাজ করে, রূপপুরে রাশিয়ানরা কাজ করে। আমাদের বিরাট সমুদ্রসীমা থাকা সত্ত্বেও আমরা দক্ষ লোকবলের অভাবে খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান করতে পারছি না। নিজের সম্পদ রেখে আমাদের উচ্চমূল্যে বিদেশ থেকে তেল ও অন্যান্য খনিজ সম্পদ আমদানি করতে হয়। অন্যদিকে আমাদের দেশের বহু মানুষ অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। তারা যদি দক্ষ শ্রমিক হিসেবে বিদেশে যেত তাহলে তাদের পরিবার বেশি লাভবান হতো, বাংলাদেশের অধিক বৈদেশিক মুদ্রা আয় হতো। বর্তমানে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার গঠন যাকে ‘পপুলেশন পিরামিড’ বলা হয়, অনেকটা সুবিধাজনক পর্যায়ে আছে। পিরামিডের মাঝের দিকটা নিচের ও ওপরের দিক হতে প্রশস্ত। এর অর্থ যুবক-যুবতীর সংখ্যা শিশু ও বৃদ্ধ বা বয়স্কদের চেয়ে বেশি। এক কথায় কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা নির্ভরশীলদের চেয়ে বেশি। এদের যদি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর করা যায় তাহলে তারা হবে জাতির নেয়ামত। উৎপাদন বাড়বে, দেশ এগিয়ে যাবে, প্রত্যেকটি পরিবার হবে সচ্ছল। অনেক সময় প্রত্যেক পরিবার থেকে একজনকে চাকরি দেওয়ার নীতি গ্রহণ করা হয়। আমাদের মতো জনবহুল দেশে তা কখনো সম্ভব নয়। তবে অধিকাংশ যুবক-যুবতীকে উদ্যোক্তা ও উৎপাদক করা গেলে পরিবার ও জাতি লাভবান হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে যোগ্যতার ভিত্তিতে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। এক ভাগ নিরক্ষর অদক্ষ শ্রমিক, এক ভাগ যোগ্যতা ও দক্ষতাসম্পন্ন কর্মজীবী, আর এক ভাগ উদার শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত অদক্ষ বেকার জনগোষ্ঠী। তৃতীয় ভাগ অভিভাবকের প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেও বেকার।
বিশাল সংখ্যক উচ্চ ডিগ্রিধারী সবার জন্য উপযোগী কর্মসংস্থান করা কোনো অবস্থায়ই অম্ভব নয়। এসব উচ্চশিক্ষিত বেকার পরিবার ও জাতির জন্য বোঝা। শিক্ষাব্যবস্থা পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে জাতির জন্য বোঝা সৃষ্টি না করে জাতির সম্পদ সৃষ্টি করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন নির্ধারিত বয়সের সবার জন্য অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মৌলিক শিক্ষা বা প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা। বৃত্তিমূলক শিক্ষা গ্রহণে বাধ্য না করে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জীবন ও কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট করা সম্ভব। সাধারণ উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকবে এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মনের উদারতা বৃদ্ধিকারী বিদ্যাসমূহ, যেমন সাহিত্য, দর্শন, রাজনীতি, ধর্ম শিক্ষার সুযোগ অবশ্য থাকবে কিন্তু আসন সংখ্যা থাকবে সীমিত। অতি মেধাবীরা এসব বিষয় অধ্যয়ন করার সুযোগ পাবে। কর্মজীবনে তারা অধ্যাপনা, গবেষণা, সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত থাকবে। বর্তমানের মতো দর্শন বা ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের ব্যাংকে, বিমা বা অন্য কোনো পেশাগত কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখাই ভালো। উচ্চশিক্ষার বিষয়ভিত্তিক আসন বণ্টন হবে দেশের পেশাভিত্তিক বিষয়ের চাহিদা অনুসারে। যেসব বিষয়ের চাহিদা আছে আসন সংখ্যা বাড়াতে হবে, প্রয়োজনে নতুন বিষয় চালু করতে হবে, পক্ষান্তরে যেসব বিষয়ের চাহিদা কম সেখানে আসন সংখ্যা কমাতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। বেসরকারি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা খুবই কম, এ সংখ্যা এক অঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা যেতে পারে।
উল্লিখিত আলোচনার ভিত্তিতে বাংলাদেশের শিক্ষানীতিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য সুপারিশ হলো : (ক) বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ হবে ন্যূনতম আট বছর। প্রাথমিক শিক্ষা হবে একমুখী, অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক। (খ) যে কোনো ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যাবে না। তবে দুই বছর বা তার কম সময় মেয়াদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য নিবন্ধন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যেমন মক্তব, টোল বা পেগোডায় স্বল্পমেয়াদি ধর্ম শিক্ষা দেওয়া যাবে। (গ) সব ধরনের প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি অবলম্বনে শিখন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি ব্যতীত অন্য কোনো শিক্ষাক্রম অনুসরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষাক্রমের অনুমোদন ও সরকারের পূর্ব অনুমতি নিতে হবে। ঘ) মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা হবে দুই ধরনের-সাধারণ মাধ্যমিক শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা।
মাধ্যমিক পর্যায়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর জন্য বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। কায়িক শ্রম জাতীয় কাজ দক্ষতার সহিত করার জন্য প্রয়োজন বৃত্তিমূলক শিক্ষা। কাঁচামালের প্রাপ্তি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা বিবেচনায় রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। (ঙ) মেধা ও প্রবণতার ভিত্তিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ সীমিতসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মনের উদারতা বৃদ্ধিকারী বিষয়সমূহের আসন সংখ্যা সীমিত রেখে বিভিন্ন পেশার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন জনবল সৃষ্টির জন্য বিষয়ভিত্তিক আসন নির্ধারণ করতে হবে। শিক্ষার অন্যান্য মৌলিক বিষয় যেমন- মাধ্যমিক শিক্ষার স্বরূপ, উচ্চশিক্ষার স্বরূপ ও উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রণ, বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণ ও নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষার মাধ্যম ও ভাষানীতি, ধর্মশিক্ষা নীতি, একীভূত শিক্ষা, শিক্ষায় অর্থায়ন, শিক্ষা আইন ইত্যাদি বিষয়ে পরবর্তী পর্বগুলোতে আলোকপাত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
লেখক: অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান, প্রাক্তন পরিচালক আইইআর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়