সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধীদের তাণ্ডবে সারাদেশের শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হলেও ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করতে ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর পৃথক চিঠি দিলেও গতকাল রোববার পর্যন্ত হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ছাড়া কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান গতকাল কয়েকটি অধিদপ্তর ও সংস্থা প্রধানকে কড়া তাগিদ দিয়েছেন।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে এসেছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনসহ ৯টি ভবনের প্রায় ১৫৮টি কক্ষে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এর পরে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজের অন্যতম রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি টাকার।
এই কলেজটিতে তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের লোকজন। দুষ্কৃতকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগে কলেজটির এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও ৯০ লাখ টাকার মালপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
ভাঙচুর করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দুর্লভ ৫০০টি ছবি এবং জাতীয় চার নেতাসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের দেড়শ ছবি।
এর পরে তালিকায় রয়েছে রাজধানীর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৬ লাখ টাকা।
এছাড়া ইডেন মহিলা কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রীর কক্ষ লুটপাট করেছে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধীরা। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে রোববার অব্দি ক্ষয়ক্ষতির তালিকা পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়াও ঢাকা কলেজে ২ লাখ টাকা, সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে ৪৫ হাজার টাকা, বগুড়ার সরকারি শাহসুলতান কলেজে ১ লাখ ৩০ হাজার, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর সরকারি কলেজে ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে গত শনিবার রাতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য চায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এই তথ্য ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী আজ এ বিষয়ক তথ্য জমার শেষ দিন।
অধিদপ্তরের চিঠিতে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনে দেশে উদ্ভূত সহিংস পরিস্থিতিতে যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা উল্লিখিত ছক মোতাবেক সফট কপি [email protected] এই ইমেইলে এবং হার্ডকপি অধিদপ্তরের উপপরিচালকের (প্রশাসন) দপ্তরে পাঠানোর জন্য বলা হলো।
অধিপ্তরের নির্দেশিত ছকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা, প্রতিষ্ঠানের ধরন, ক্ষয়-ক্ষতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা, সম্ভাব্য ক্ষতির পরিমাণ (টাকায়) ইত্যাদি বিষয় লিখে পাঠাতে হবে।