চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সিদ্দিক সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বেধড়ক পিটিয়েছেন। একই সঙ্গে ১০০ বার কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন। এতে ২০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা প্রায় দুই ঘণ্টা ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী নির্যাতনের এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আবু সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্ত নেই। বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল কম্পিউটার ল্যাবের ল্যাপটপ বিক্রি, বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাৎ, চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এক যুগ আগে শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নামে ১৬ লাখ টাকা ঘুস নেওয়ার অপরাধে ৬ আগস্ট চুয়াডাঙ্গা আদালত আবু সিদ্দিককে এক বছরের কারাদণ্ড এবং ৮ লাখ টাকা জরিমানা করেন। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ২০ দিন কারাবাসের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্ত হন তিনি। মঙ্গলবার পুনরায় প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন আবু সিদ্দিক। পরদিনই বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ক্লাসে যান তিনি। আচমকা ইংরেজির নতুন পাঠ থেকে পড়া ধরলে ছাত্রছাত্রীরা উত্তর দিতে পারেনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি কয়েকজনকে বেত্রাঘাত করেন। পরে সব ছাত্রছাত্রীকে ১০০ বার কান ধরে ওঠবস করতে বলেন। অনেকে ৫০-৬০ বার ওঠবস করতে করতে পড়ে যায়। ছুটির পর সপ্তম শ্রেণির প্রায় সব ছাত্রছাত্রী পায়ের ব্যথায় খুঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে যায়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা স্কুলে জড়ো হয়ে বিচারের দাবিতে প্রধান শিক্ষককে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। অভিভাবক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রধান শিক্ষক অমানবিক কাজ করেছেন।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিল্লাল গনি বলেন, ‘লজ্জায় ঘৃণায় মরে যাচ্ছি। দীর্ঘদিন পর তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করলেন। এসেই ঘটালেন বাজে ঘটনা। এমন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয় চালানো যায় না। অভিভাবকদের চাপে আগামীকাল (আজ) বিদ্যালয়ে জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।