শিক্ষার্থী না থাকায় সোমবার থেকে বন্ধ হয়ে গেলো উলুবেড়িয়া ১ ব্লকের বহিরা পঞ্চায়েতের ছোট আমশা জুনিয়র হাইস্কুল। ওই বিদ্যালয়ের একমাত্র শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলি করেছে শিক্ষা দপ্তর। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দিলীপ মাইতি বলেন, ‘বেশ কিছু দিন ধরেই ওই বিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা শূন্য ছিল। তাই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যদি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, তা হলে স্কুল আবার খুলবে।’
২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে অবসরপ্রাপ্ত কয়েক জন শিক্ষিক-শিক্ষিকার হাত ধরে পথচলা শুরু এই বিদ্যালয়ের। গ্রামের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে নিয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চলত পঠনপাঠন। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে এখানে এক জন স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষা দফতর। তবে প্রথম থেকেই পড়ুয়া অনুপাতে শিক্ষক-শিক্ষিকা ছিল কম। তার জেরে ক্রমশ কমছিল পড়ুয়া। করোনা-পরবর্তী সময়ে আর পড়ুয়া ভর্তি হয়নি বললেই চলে। আর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে একজন পড়ুয়াও ভর্তি হয়নি।
শিক্ষার্থী না আসলেও গত কয়েক বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে আসছিলেন শিক্ষিকা ঝুমা পাল। শুক্রবার বিদ্যালয়ে তার শেষ দিন ছিল। তার কথায়, ‘শিক্ষা দফতর আমাকে কুলগাছিয়া নেতাজি বালিকা বিদ্যামন্দিরে বদলি করেছে। বিদ্যালয়ের চাবি দিয়ে এসেছি পাশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকাদের কাছে।’ তার গলাতেও মন খারাপের সুর। ওই শিক্ষিকার আক্ষেপ, ‘‘প্রথম দিকে শিক্ষিকা ছিল না। আর পরে, পড়ুয়া। যে স্কুলে পড়িয়েছি, সেটা বন্ধ হয়ে গেলে খারাপ লাগাই তো স্বাভাবিক।’
গ্রামের বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আক্ষেপ কম নয় গ্রামবাসীরও। এলাকার বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক রঘুনাথ পুরকাইত বলেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভরসায় এই বিদ্যালয় চালু হয়েছিল। তারা আর কত দিন টানবেন? অভিভাবকেরাও ইংরেজি মাধ্যমের দিকে ঝুঁকছেন। গ্রামের একটি বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়া তো লজ্জার!’’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা