সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার আলোচিত স্কুলশিক্ষক অজিত বরণ তালুকদারের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। অন্যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়াদি উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে এবার বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালকের কার্যালয়।
অজিত বরণ তালুকদার শাল্লা উপজেলার উজানযাত্রা পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে টাকা নেওয়ার দায়ে আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ দাসের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্যালয় থেকে এমন একটি চিঠি এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে। বিভাগীয় মামলা রুজু হওয়ার বিষয়টি ওই চিঠি থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই চিঠিতে তার সংশ্লিষ্ট দপ্তর নির্দিষ্ট তারিখে তাকে স্ব শরীরে উপস্থিত হয়ে এসবের জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিঠির মাধ্যমে তার কাছে প্রশ্ন করা হয়েছে। তার অসদাচরণের জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করে উক্ত বিধিমালার ৪(৩)(ঘ) অনুযায়ী তাকে কেন চাকরি হতে বরখাস্ত করা যাবে না বা অন্য কোনো উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা যাবে না, সেই জবাব চেয়েছে অজিত বরণ তালুকদারের কাছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
চিঠি সূত্রে আরও জানা যায়, শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদার শাল্লা উপজেলার আছানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইন্দুভূষণ দাসকে পাঁচ বছর আগে কড়া সুদের বিনিময়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। সেই টাকার বিনিময়ে চেকের মাধ্যমে সুদ হিসেবে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন তিনি। যা সরকারি চাকরির (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এ ছাড়াও স্কুলে অনুপস্থিত হয়ে বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তার সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাকে (অজিত মাস্টার) একাধিকবার সতর্ক করে দেওয়ার পরেও উলটো প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে শিক্ষা কর্মকর্তাকে হুমকি প্রদান করেন তিনি।
উক্ত শিক্ষকের এহেন কর্মকাণ্ডে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্যকরণ ও অসদাচরণের পর্যায়ভুক্ত বিধায় উক্ত বিধিমালার ৩(খ) অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে বিভাগীয় মামলার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অজিত বরণ তালুকদার বলেন, আমি উপপরিচালকের কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত হয়ে এই বিষয়ে জবাব দিয়েছি। তারা আমার জবাব গ্রহণ করেছেন। তোমরা (সাংবাদিকদের উদ্দেশে) এ বিষয়ে রিপোর্ট না করলে আমার জন্য ভালো হয়। যেহেতু বিষয়টি নীরব আছে নীরবই থেকে যাক।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক জালাল উদ্দীন বলেন, আমরা এগুলো নিয়ে মুখস্থ করে বসে থাকি না। বিভাগীয় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে একপর্যায়ে তিনি বলেন, তদন্ত করা হয়েছে। বাকি তথ্য খোঁজ নিয়ে বলতে হবে।