সরকারিভাবে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অংশ নিতে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার শোকজের (কারণ দর্শনানোর নোটিস) মুখে পড়েছেন মাগুরা সদর উপজেলার বড়শলই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নব কুমার রায়সহ বিদ্যালয়টির আরও দুই সহকারী শিক্ষক। যদিও তারা থানা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই সেখানে গিয়েছিলেন।
ঘটনার দিন টেলিফোনিক পরিদর্শনে তাদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত না পেয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছেন সহকারী সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু সায়েম বিশ্বাস। আজ সোমবার কারণ দর্শানোর নোটিসের জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক নব কুমার রায়।
প্রধান শিক্ষক নব কুমার রায় বলেন, ‘ঘটনার দিন সদর উপজেলার বেরইল পলিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট ছিল। সেখানে বেরইল পলিতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে বড়শলই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ফুটবল খেলা ছিল। এই খেলায় অংশ নেওয়ার জন্য দুজন সহকারী শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম ও তারিকুল ইসলামকে তাদের সঙ্গে পাঠানো হয়েছিল। আমি নিজে খেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য কিছু খাবার নিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম।’
কিন্তু বিদ্যালয়ে গিয়ে কোনো পরিদর্শনকারী কর্মকর্তাকে পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরে জানতে পেরেছি সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল আকতার স্যার মোবাইল ফোনে আমাদের উপস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন। তারপর ২ আগস্ট কারণ দর্শানোর নোটিস পাই। আমি ওই দিন সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অনুমতি নিয়েই কার্যত ফুটবল টুর্নামেন্টে দুজন সহকারী শিক্ষককে সকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পাঠিয়ে দিই। পরে আমি নিজে খেলায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের জন্য খাবার নিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম।’
এ ব্যাপারে মাগুরা সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান খান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রয়োজনেই ফুটবল টুর্নামেন্টে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের যাওয়ার কথা। ঘটনার দিন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল আকতার আমার কাছে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক না থাকার বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে ফুটবল টুর্নামেন্টের কথা জানিয়েছিলাম। তদুপরি কেন এ ধরনের কারণ দর্শানো নোটিস ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও দুই সহকারী শিক্ষককে দেওয়া হলো বিষয়টি বুঝতে পারছি না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কারণ দর্শানোর নোটিসে স্বাক্ষরকারী সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু সায়েম বিশ্বাস বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমাকে দিয়ে নোটিস করিয়েছেন। তার নির্দেশেই আমি এ নোটিস করতে বাধ্য হয়েছি। ফুটবল খেলায় শিক্ষকদের যাওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবুও যেহেতু ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, সে কারণে আমি তার নির্দেশ পালনে বাধ্য।’
এ বিষয়ে জানতে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল আকতারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।