পিরোজপুর সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এডিপিইও) মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ ও কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকরা। জেলার সদর উপজেলা ও নাজিরপুরের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেয়া ওই লিখিত অভিযোগের কপি ভুক্তভোগী শিক্ষকরা গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের পাঠান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এডিপিইও) মো. কামরুজ্জামান বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পরিদর্শনের সময় নানা অজুহাত দেখিয়ে শিক্ষকদের হয়রানিসহ জোর করে ঘুষ আদায় করেন। তার ওই ঘুষ আদায়ে সহযোগিতা করেন জেলার সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তপা বিশ্বাস।
নাজিরপুর উপজেলার ৯৪ নম্বর ভাইজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা করুনা বিশ্বাস অভিযোগে জানান, ওই কর্মকর্তা গত ১২ সেপ্টেম্বর তার বিদ্যালয়টি ছুটিকালে সেখানে পরিদর্শনে যান। পরে বিদ্যালয়ের ৭ শিক্ষককে ছুটির আগে বিদ্যালয় ত্যাগের অভিযোগ দেখিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশসহ বেতন কর্তনের আদেশ দেন। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর ওই প্রধান শিক্ষিকা ওই কর্মকর্তার কাছে যান। এ সময় সেখানে থাকা সদর উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তপা বিশ্বাসের মাধ্যমে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতি শিক্ষক বাবদ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
একই অভিযোগ উপজেলার ২ নম্বর সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৫ নম্বর কতুলুইতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১২ নম্বর দীর্ঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। তাদের দাবি ওই কর্মকর্তা ওইসব বিদ্যালয় পরিদর্শনের নামে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়া জেলার সদর উপজেলার ৮ নম্বর নন্দীপাড়া গাবতলা ও ৫৮ নম্বর গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও একই অভিযোগ করেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (এডিপিইও) মো. কামরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ভাইজোড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি পরিদর্শনকালে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খালিদ হোসেন সজলের স্ত্রী ফারজানা ইয়াসমিন ও তার ননদ (চেয়ারম্যানের বোন) ডায়মন্ড আক্তারকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন, তারা বিভিন্ন সময় ভাই ও স্বামীর প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ছুটি ভোগ করেন। প্রধান শিক্ষক ওই দুই শিক্ষক ছুটিতে থাকার কথা বললেও কোনো আবেদন দেখাতে পারেননি। আর ৫৮ নম্বর গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোনো ধরনের খাত দেখানো ছাড়া কিছু টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপা বিশ্বাস বলেন, আমি ওই দিন জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে নাজিরপুরের ভাইজোড়া যাইনি। আমি সম্প্রতি অন্যত্র বদলি হয়েছি, তাই সেখানে আছি।