কাজ শেষ না করেই টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ২৮টি ভবন নির্মাণে ঠিকাদারি কাজ পাওয়া শফিক এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ তুলেছেন খোদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানান, শফিক এন্টারপ্রাইজ নির্মাণ করা সব ভবনে কোনো না কোনো ত্রুটি রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ঢাকা মেট্রোর বেশ কয়েক জন কর্মকর্তার সঙ্গে সিন্ডিকেট গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ।
শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ থেকে ২৮টি ভবন নির্মাণের দায়িত্ব পায় শফিক এন্টারপ্রাইজ। ঐ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স দিয়ে কাজ পেয়েছে অন্যরাও। কিন্তু তার বেশির ভাগ কাজে ভুল এবং অনিয়ম পাওয়া গেছে। এমনই অনিয়মের শিকার জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিও (নায়েম)। প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক ভবন সম্প্রসারণের কাজও পায় শফিক এন্টারপ্রাইজ। তাদের গাফেলতিতে ২০১৯ সালে কাজ শুরু হলেও গত দেড় বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানটির ভবন সংকট চরমে পৌঁছেছে।
এ প্রসঙ্গে নায়েমের মহাপরিচালক নিজামুল করিম বলেন, ঠিকাদারের ভাই পরিচয়ে একজন আমাদের কাছে এসেছিলেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও ছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন যে, শিগিগরই কাজটা শুরু করবেন। এক দিন কাজ করেছিলেনও। করার পর অনেক দিন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঢাকা কলেজে ১০ তলা একটি ভবনও নির্মাণ করে শফিক এন্টারপ্রাইজ। সে ভবনের নকশায়ও ত্রুটি ধরা পড়েছে। এছাড়া লিফট না রাখায় ভোগান্তি বেড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। এ প্রসঙ্গে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, আমি হতাশা প্রকাশ করি এ কাজে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনের সামনে যদি পানির ট্যাংক থাকে তাহলে শিক্ষার্থীদের অবাধ বিচরণে বিঘ্ন ঘটবে। এখানে সেটিই ঘটেছে।
শফিক এন্টারপ্রাইজের তত্ত্বাবধায়ক তরিকুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক জটিলতার কারণে এতদিন একটু সমস্যা ছিল। এখন মোটামুটি জটিলতা কেটে গেছে। আমরা দ্রুততার সঙ্গে কাজ শেষ করে দেব।
এদিকে, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের ঢাকা মেট্রোর কয়েক জন কর্মকর্তার সঙ্গে শফিক এন্টারপ্রাইজের সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। যার জোরে তারা কাজ পেয়েছে। সে জোরেই কাজ শেষ না করে পুরো বিল তুলে নেওয়ার প্রমাণও মিলেছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি এ প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করছে। কুক্ষিগত করার প্রক্রিয়াটি আমি প্রশ্রয় দেব না। আমার দিক থেকে এ ধরনের চেষ্টার প্রতিহত করার কাজ জারি থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর আগেও শিক্ষা প্রকৌশলের বিরুদ্ধে এ ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয় কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ ধরনের অনিয়ম কমবে না।