শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি বরাদ্দের টাকা দেয়ার লোভ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে এক শ্রেণির প্রতারক চক্র। তারা ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা’ পরিচয়ে দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করছেন। পারফম্যান্স বেজড গ্রান্টস্ ফর সেকেন্ডারি এডুকেশন স্কিমের বরাদ্দের টাকা পাঠানো হবে বলে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের তথ্য চাচ্ছেন।
তবে, বিষয়টি প্রতারণা বলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে নিশ্চিত করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, অধিদপ্তর থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কখনোই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড সংশ্লিষ্ট তথ্য চাওয়া হয় না। তিনি প্রতারক চক্রকে তথ্য না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী মোহাম্মদপুরের বেঙ্গলি মিডিয়াম হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র দাসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে প্রতারকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রধান শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, পারফম্যান্স বেজড গ্রান্টস্ ফর সেকেন্ডারি এডুকেশন স্কিমের বরাদ্দের টাকা পাঠানো হবে বলে প্রতারকরা তার কাছে ব্যক্তিগত ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড এবং পার্সোনাল অ্যাকাউন্টের তথ্য চায় প্রতারকরা। তবে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি প্রতারণ বলে আঁচ করতে পেরেছিলেন।
প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র দাস দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, অধিদপ্তর থেকে সরকারি বরাদ্দ আসলে তা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে আসবে। কিন্তু তারা আমরা কাছে ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চাওয়ায় আমরা সন্দেহ হয়। তাই আমি কোনো তথ্য দেইনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি এটা প্রতারকদের কাজ। তারা আরো বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে একই ধরণের তথ্য চেয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার আরো বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ এ ধরণের ফোনকল পেয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা বলছেন, তাদের অনেকে বিষয়টি প্রতারণ বলে বুঝতে পেরেছেন। আবার অনেকে বিষয়টিতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে কোনো নির্দেশনা বা চিঠি যদি দেয়া হয় তবে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সতর্ক থাকতে পারবেন।
গতকাল সন্ধ্যায় এসব বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিষয়টি ভুয়া। অধিদপ্তর থেকে কখনো প্রতিষ্ঠান প্রধান বা অধ্যক্ষদের ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হয় না। এটা প্রতারকদের কাজ। অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে কেউ ব্যক্তিগত ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চাইলে তাদের তথ্য না দেয়ার পরামর্শ দেবো প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। আর তাদের বিষয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা পুলিশকে জানাতে হবে। আর অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অধ্যক্ষদের সতর্ক করে চিঠি ইস্যু করার ব্যবস্থা করছি।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।