মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জীকে তাঁর কার্যালয় থেকে বের করে দিয়েছে একদল তরুণ। তরুণরা নিজেদের স্থানীয় পরিচয় দিয়ে পরিচালককে কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে কক্ষে তালা দেয়ার পর চাবি নিয়ে চলে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেলা ৩টা ২০ মিনিটে ২০–৩০ জন তরুণ এই কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। তাঁরা পরিচালকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের অনুসারী শিক্ষকদের কাজ করে দেয়ার অভিযোগ তুলে তাঁকে কার্যালয় থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
শিক্ষা ভবন সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী আঞ্চলিক শিক্ষা ভবনের চতুর্থ তলায় মাউশির রাজশাহীর আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়। পরিচালক ওই তরুণদের কাছে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তিনি সরকারের একজন কর্মচারী। তাকে কেউ এভাবে অফিস ত্যাগ করতে বাধ্য করতে পারেন না। তার কথা শুনে তরুণরা বলেন, তারা কোনো কথা শুনতে চান না।
একপর্যায়ে পরিচালক শিক্ষার মহাপরিচালককে ফোন করার জন্য মোবাইল ফোন হাতে তোলেন। কিন্তু ওই তরুণেরা তাঁকে ফোন করতে বাধা দেন। তাঁরা বলেন, পরিচালক যা বলবেন কার্যালয়ের বাইরে গিয়ে বলবেন। ভেতরে কিছু বলতে পারবেন না। বাধ্য হয়ে তিনি তাদের চাপের মুখে কার্যালয় থেকে বের হয়ে আসেন। তারপর তাঁরা তাঁর কার্যালয়ে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যায়।
পরিচালক অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জী বলেন, চাপের মুখে তিনি কার্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা যে অভিযোগ নিয়ে এসেছিল তা সত্য নয়। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পরও অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সেপ্টেম্বরের এমপিওর কাজ তিনি এবং তাঁর অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিলে সম্পন্ন করেছেন। ঘটনার পরই তিনি রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি অবহিত করেন। বিভাগীয় কমিশনার তাঁকে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করার জন্য বলেছেন।
বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, পরিচালক তাকে টেলিফোন করে বিষয়টি জানিয়েছেন। কে বা কারা তার কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি ডেকে ডেকে আওয়ামী লীগের লোকের কাজ করে দিচ্ছেন। যারা এসেছিল তারা কেউ শিক্ষার্থী নয়। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। এভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে কার্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য করা যাবে না।
তিনি পরিচালককে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তিনি তার মতো কাজ করবেন, যদি কোনো কিছু হয় তাহলে তারা তাকে সমর্থন দেবেন। কারণ এই মুহূর্তে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হোক এটা তারা চান না। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন। তারা বিষয়টি নিয়ে অবগত আছেন। সুতরাং এই বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না।
এদিকে মঙ্গলবার তালা দেয়ার অভিযোগে যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজশাহী মহানগর বিএনপি এক চিঠিতে এ তথ্য জানায়।
আবুল কালাম আজাদ (সুইট) ও তোরাব আলীকে (পারভেজ) বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।