শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক পদের অপব্যবহার, সরকারবিরোধী তৎপরতা, ক্যাডার সমিতির নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করতে পদের অপব্যবহারসহ নানা দুর্নীতির তদন্ত শুরু হচ্ছে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাকে ঢাকা শহরের সবচেয়ে ছোট্ট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বদলি করা হয়েছে। ৯ জুন থেকে শুরু হবে নানামুখী তদন্ত। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলেও দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন। বদলি আদেশের খবরে অধিকাংশ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, শিক্ষা বিভাগের দুই সচিব, মন্ত্রীর পিএসসহ উপরি মহলের সবার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তারা উল্লাস প্রকাশ করছেন। ফেসবুকে জানান দিচ্ছেন ভুক্তভোগী শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা। স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন তারা।
এদিকে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষা অধিদপ্তর, পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসা বোর্ড, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহীর নিউ ডিগ্রী কলেজ, নায়েম ও কয়েকটি কলেজের প্রধানদের প্রভাবিত করা হচ্ছিলো।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বদলির আদেশ জারির পর পর গ প্যানেল সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়, কেউ কেউ ফেসবুক থেকে তাদের প্যানেলের পক্ষের প্রচারণার তথ্য সরিয়ে ফেলছেন। কেউ কেউ উপরি মহলে ফোন করে বলা শুরু করছেন যে, পদের ভয়ে তারা ওই প্যানেলের পক্ষে ভোট ভিক্ষা করছিলেন। বদলি ও তদন্ত শুরুর খবরের পর একটা সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে এবং কোনো পিএস/এপিএস বা তস্য জুনিয়ররা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারবে না। এসিআরের কাউন্টার সাইন দেবেন মহাপরিচালক মহোদয়। সুতরাং নো চিন্তা।
জানা যায়, সরকার তাকে প্রভাষক পদে চাকরি দিলেও গত সাড়ে ১৫ বছরে একদিনের জন্যও তিনি সরকারি কোনো কলেজে চাকরি করেননি। পাঁচ বছর ধরে তিনি কলেজ ও প্রশাসন পরিচালক ছিলেন। তার আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিবসহ বিভিন্ন পদে থাকাকালে আকন্ঠ দুনীর্তিতে নিমজ্জিত ছিলেন। অথচ শিক্ষা ক্যাডারের হাজার হাজার কর্মকর্তা পুরো জীবনটাই কলেজে চাকরি করে বিদায় নিতে হয়।
শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেছেন,গ প্যানেল মূলত বেদরকারি রতন ও পলাতক বাড়ৈ সিন্ডিকেটের। তারা গত একমাস ধরে প্রচার করে আসছিলেন যে, শিক্ষা প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সবাই এই প্যানেলের পক্ষে। এতে ক্ষুব্ধ হন তারা। এছাড়া এই প্যানেলের একজন তস্য জুনিয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধেও রয়েছে সিনিয়রদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগ।
এদিকে শাহেদুলের বদলিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সনদ জালিয়াতির সিন্ডিকেট থেকে ঘুষ নেওয়া সাংবাদিকরাও। জামাত-বিএনপিপন্থী শিক্ষা সাংবাদিক যারা মাউশি অধিদপ্তরের কলেজ শাখা থেকে নানা অবৈধ সুবিধা নিতেন তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ এ বি এম রেজাউল করিমকে অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার আপাতত পরিচালক করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই পদে নতুন কেউ আসতে পারে বলেও জানা গেছে।