শিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা! - দৈনিকশিক্ষা

শিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি ছিলেন ছাত্রলীগ নেতা!

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ঢাবি |

সভাপতির পরিচয় প্রকাশের পর তুমুল আলোচনার মধ্যে সামনে এল ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেলের পরিচয়৷ এস এম ফরহাদ নামে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী থাকতেন কবি জসীমউদ্‌দীন হলে। তিনি ছাত্রলীগেরও পদধারী ছিলেন।

গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এস এম ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর নানা আলোচনা তৈরি হয়েছে।  

এর আগে গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগ দেওয়ার পর ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েমের পরিচয় সামনে আসে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাদিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাকে জানতেন সবাই। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও গিয়েছিলেন সাদিক কায়েম।

জানা গেছে, সাদিক ও ফরহাদ দুজনই চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

গত রোববার রাতে শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি জেনারেল এস এম ফরহাদের পরিচয় সামনে এলে তাঁর পরিচিতজনদের অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। ফরহাদ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে কবি জসীমউদ্‌দীন হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ক্লাবে এর ঠিক আগের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র এ এস এম কামরুল ইসলাম। শুধু তা-ই নয়, জসীমউদ্‌দীন হলে চার বছর ধরে ফরহাদের সঙ্গে একই কক্ষে (৩০৮ নম্বর) থেকেছেন তিনি। ফরহাদের রাজনৈতিক পরিচয় শুনে বিস্মিত কামরুল রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মানুষ অবাক হয়। মাঝেমধ্যে প্রচণ্ড অবাক হয়। কেউ কেউ অবাক হয়ে আকাশ থেকে পড়ে৷’

ফরহাদের ছাত্রশিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসার পর আরেকটি পরিচয়ও সামনে এসেছে; সেটি হলো তিনি ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে ঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ নিয়ে ফেসবুকে পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা দেখা গেছে। ওই কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীর তালিকায় তাঁর নাম দেখা গেছে।

কবি জসীমউদ্‌দীন হল ডিবেটিং ক্লাবের একটি ইফতার অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কারিগরি শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এম রাকিব সিরাজীর সঙ্গে ফরহাদের একটি ছবি এবং তানভীর হাসানকে ফরহাদের ফুল দেওয়ার আরেকটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

তবে সোমবার দুপুরে এস এম ফরহাদ বলেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট বিভাগ ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমে আমি অংশও নেইনি। এমনকি ছাত্রলীগের কোনো পদ-পদবীর জন্য কাউকে কখনই সিভি দেইনি।

তিনি বলেন, বিভাগের কমিটিতে কাকে রাখা হবে সেটা সংশ্লিষ্ট ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত। সেখানে আমাকে কেনো জড়ানো হচ্ছে? যেখানে আমি বিভাগ ছাত্রলীগের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। এই বিষয়টিকে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের স্পিরিট ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র মনে করি।

ছাত্রশিবিরের ঢাবি সেক্রেটারি আরও বলেন, আমি হল ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ও বিভাগের ডিবেটিং ক্লাবের সেক্রেটারি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। তখন বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে পরিচয় ও তাদের সঙ্গে তোলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, যার সবগুলোই ছিলো ডিবেট ক্লাব সংশ্লিষ্ট আয়োজন। কোনো রাজনৈতিক আয়োজন নয়।

এদিকে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা প্রকাশ্যে আসছেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, তাঁদের সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পুরো কমিটি খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার আমাদের আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিকস (গোপন রাজনীতি) করতে বাধ্য করেছে। আমাদের দানব আকারে হাজির করা হয়েছে। এটি থেকে আমরা নিস্তার চাই। প্রত্যেকে প্রত্যেকের রাজনৈতিক চর্চা করবে, সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে, কারও ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া হবে না—সেটাই আমাদের চাওয়া।’

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিবিরের ২১টি পদ রয়েছে কমিটিতে। সভাপতি ও সেক্রেটারি জেনারেল পদ ছাড়া বাকি পদগুলো হলো- সাংগঠনিক সম্পাদক, অফিস সম্পাদক, শিক্ষা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, বায়তুল মাল সম্পাদক, গবেষণা সম্পাদক, আইটি সম্পাদক, কোচিং সম্পাদক, আন্তর্জাতিক সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, মানবসম্পদ উন্নয়ন সম্পাদক, অঞ্চল পরিচালক, অনুষদের সভাপতি, হল সভাপতি, হল সেক্রেটারি, ইনস্টিটিউট পরিচালক, উপশাখা পরিচালক ইত্যাদি।

প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0076818466186523