খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন। গোমতি বিরেন্দ্র কিশোর (বিকে) উচ্চ বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির পাঠদান চলাকালে এই ঘটনা ঘটে। ১৩ মার্চ এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি পরে জানাজানি হয়। সরেজমিন বিদ্যালয়ে গিয়ে এর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার জানান, সকালে আমি ক্লাসে পাঠদান করছিলাম। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শ্রেণিকক্ষের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন। চেয়ারম্যান বাচ্চাদের পাঠ্য বই থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন এবং পাঠ্যবই ‘রিডিং পড়তে’ বলেন। বই থেকে বিভিন্ন শব্দার্থ জিজ্ঞেস করেন। বাচ্চারা ভয়ে রিডিং পড়তে না পারায় চেয়ারম্যান রেগে যান। আমাকে বেত নিয়ে আসতে বলেন। বিদ্যালয়ের বেতের ব্যবহার নিষিদ্ধ বলে তাকে জানাই। তারপরও আমাকে বাঁশের কঞ্চি নিয়ে আসতে বাধ্য করেন। সেই কঞ্চি দিয়ে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থীকে পেটান।
বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদা আক্তার বৃষ্টি, আয়েশা আক্তার জেরি, ঝরনা ত্রিপুরা, ফাহাদুল ইসলাম সিয়াম ও তাদের বেত্রাঘাতের বিবরণ দেয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষকক নুরুল হুদা জানান, ‘ঘটনার দিন দাপ্তরিক কাজে আমি মাটিরাঙা উপজেলা সদরে ছিলাম। বিদ্যালয়ে আসার পর বিয়য়টি জানতে পারি। ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীরে পেটানোর কোনো বিধান নেই। বিদ্যালয়ে আমরা বেতও রাখি না। বেত্রাঘাত প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন আমি ‘মেজাজ হারিয়ে’ এ কাজটি করেছি। তাদেরকে (শিক্ষার্থী) পাঠাবইয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানতে চেয়েছি। শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। পরে ম্যাডামকে বেত আনতে বলেছি। সামনের বেঞ্চের শিক্ষার্থীদের চিকন একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে আঘাত করেছি। আমরা অন্য কোনো উদ্দেশে ছিল না। তারা কথা না বলায় মেজাজ হারিয়েছি।এই ঘটনায় স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী বলেন, কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। তবে আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেব।