ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কক্ষ সংকটের কারণে খোলা মাঠে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয় ভবনটি মাত্র দুই কক্ষ বিশিষ্ট হওয়ায় দুই পালায় শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু তারপরও স্থান সংকুলান না হওয়ায় এক শ্রেণির কার্যক্রম চলে খোলা আকাশের নিচে। পরীক্ষা চলাকালীন কিংবা পরীক্ষার সময়ে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। বিদ্যালয় ভবনটিও জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো কক্ষও নেই। সিঁড়িঘরেই চলে বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কার্যক্রম। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনাগাজীর নবাবপুর ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় কয়েকজন লোকের দান করা ৫৩ শতক জমির ওপর টিনের ঘর তুলে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। চার-পাঁচ বছর পর টিনের ঘরটি নষ্ট হয়ে গেলে বেশ কয়েক বছর বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকে। পরে স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি পুনরায় চালু করা হয়। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি একতলা পাকা ভবন নির্মিত হয়। ২২-২৩ বছরের পুরানো ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ইতিমধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় খসে পড়েছে পলেস্তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বসে একত্রে পাঠদান করছে। অপর কক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়ের মাঠের পূর্বপাশে খোলা আকাশের নিচে টেবিল-চেয়ারে চলছে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শিক্ষকদের বসার কোনো স্থান না থাকায় সিঁড়িঘরে বসে অফিসের কাজ করছেন শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টিতে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। পুরানো ভবনটি দিনদিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। কক্ষ সংকটের কারণে এক সঙ্গে সবার পাঠাদান ও পরীক্ষা নেওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে মাঠে পঞ্চম শ্রেণির ২২জন শিক্ষার্থীর পাঠদান চালাতে হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবদুল মান্নান বলেন, একটি নতুন ভবন করা খুবই জরুরি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি তিনি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে নতুন একটি ভবন বরাদ্দের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।