এখন থেকে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ‘হিজড়া’ পরিচয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন।
আগে মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ পরিচিতির নির্ধারিত স্থানে টিক চিহ্ন দেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী কলাম ছিল। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের কারো টিক চিহ্ন দেয়ার সুযোগ ছিল না।
এবার সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রে লিঙ্গ পরিচিতির জায়গায় প্রথমবারের মতো ‘হিজড়া’ শব্দটি যুক্ত করছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা-২০০৮ সংশোধন করে বিধানটি সম্প্রতি যুক্ত করেছে সংস্থাটি।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে গত ৩০ নভেম্বর সাক্ষাৎ করে ‘হিজড়া’ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন সংগঠন ‘সুস্থ জীবন’।
সংগঠনের চেয়ারম্যান পার্বতী আহমেদ সে সময় তাদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দাবি তোলেন- ‘জাতীয় সংসদে নারী আছে, পুরুষ আছে, আমরা কই? কাজেই আমাদের একজন দরকার।’
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকের পর কমিশন বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসে। পরবর্তীতে আইনে কিভাবে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা যায়, সে বিষয়টিও খুঁজে বের করেন। যার ফলশ্রুতিতেই আনা হলো সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় সংশোধন।
এই সংশোধনের ফলে হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব পরিচয়েই সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারবেন।
এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র থেকেও যেমন তারা প্রার্থী হতে পারবেন, তেমনি দল থেকেও এই পরিচয়ে প্রার্থী হতে পারবেন। এদিকে সংসদ নির্বাচনের বিধিমালায় এই সংশোধন আনা হলেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জেলা পরিষদ নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিধিমালায় এখনও বিষয়টি যুক্ত করা হয়নি।
হিজড়া জনগোষ্ঠী দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে কেএম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন প্রথমবারের মতো আইন সংশোধন করে ‘হিজড়া’ শব্দটি ভোটার নিবন্ধন ফরমে যোগ করেন। বর্তমানে ইসির সার্ভারে সংরক্ষিত তথ্য অনুযায়ী, দেশে হিজড়া ভোটার রয়েছে ৮৩৭ জন।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের আগে হিজড়াদের ভোটার হতে হলে মহিলা কিংবা পুরুষ, এই দু’টির যে কোনো একটি লিঙ্গ বেছে নিতে হতো। এতে পরিচয় সনাক্তের জন্য সিভিল সার্জনে প্রত্যয়ন প্রয়োজন হতো, যা তাদের নানা বিড়ম্বনায় ফেলতো।