পতিত স্বৈরাচার পেছন থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে অভিযোগ করে সবাইকে সর্তক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত দুইদিনে রাজধানীতে সহিংস ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশের চারদিকের অবস্থা দেখে অনেকে একটু আতঙ্কিত হচ্ছেন, একটু উদ্বিগ্ন হচ্ছেন, এগুলো কি হচ্ছে? আসলে আপনাদের বুঝতে হবে আমাদের সেই শত্রুরা যারা সামনে থেকে চলে গেছে…পেছনে থেকে তারা দেশকে আবার অস্থির করে তুলছে। এখানে আমাদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। দুর্ভাগ্য আমাদের, দেশের মানুষেরা কেনো যেনো অধৈর্য হয়ে গেছে। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আজকে এই অন্তবর্তী সরকারকে আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, এই সরকার ফেল করলে অভ্যুত্থান ফেল করবে, বিপ্লব ফেল করবে…আমরা আবারো সেই অন্ধকারে চলে যাবো।
রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ‘তারেক রহমান: পলিটিক্স এন্ড পলিসিস কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের এই প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, গ্রন্থটি প্র্রকাশ করেছে নিউইয়র্কের ‘উড ব্রিজ’। অনুষ্ঠানস্থলে গ্র্রন্থটি এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়। ৫৭১ পৃষ্ঠার গ্রন্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন-কর্ম-রাজনীতির নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, একটা বিষয় অত্যন্ত জরুরি বলে আমি বলতে চাই, দুর্ভাগ্যক্রমে আজকে একটা ভয়াবহ কাজ শুরু হয়েছে… যেটা হচ্ছে, সংবাপত্রের ওপর আঘাত, স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে আঘাত। যার জন্যে আমরা সব সময় সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি। খালেদা জিয়া ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পরে তিনি প্রথম সংবাদপত্রকে মুক্ত করেছিলেন।
তিনি বলেন, যে সমস্ত কোমলমতি বালকেরা, ছাত্ররা তারা যে সমস্ত কাজ করছে তাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ধর্য্য ধরতে হবে। এটা একটা অন্তবর্তী সরকার। এই সরকারের পক্ষে সবকিছু এক সঙ্গে করে ফেলা সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি প্রায় সবসময় এই কথাটা বলি যে, ইচ্ছা করলেই, চেষ্টা করলেই কাউকে ম্লান করে দেয়া যায় না, উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইতিহাসকে বিকৃত করা যায় না। কিউবার ফিদেল কাস্ট্রো তিনি যুদ্ধ করতেন প্রথম দিকে। সেই ইতিহাস ধারণ করেছে জিয়াউর রহমানকে, বেগম খালেদা জিয়াকে, তারেক রহমানকে। প্রবাসে থেকে দলকে সংগঠিত করে এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিক রেহমান, চারু কলা ইন্সটিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুল হালিম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম আজাদ,মাহবী আমিন, আনোয়ার হোসেন খোকন, সেলিম রেজা, শামা ওবায়েদ, আফরোজা আব্বাস, বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, কুটনীতিক ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।