প্রশাসনে সব স্তরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করবে অন্তর্বর্তী সরকার। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব ও বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ (আইজিপি) প্রশাসনে দুই ডজনের বেশি কর্মকর্তা বর্তমানে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করছেন। এসব কর্মকর্তা পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, প্রশাসনের ৮৫ জন সচিবের মধ্যে ১৮ জন চুক্তিভিত্তিক চাকরি করছেন। শুধু গত জুনেই মুখ্য সচিবসহ অন্তত চারটি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়েছে। সর্বশেষ গত ৪ জুলাই সিনিয়র সচিব মর্যাদায় সাবেক জননিরাপত্তা সচিব মোস্তাফিজুর রহমানকে দুই বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের স্মার্ট বাংলাদেশ টাস্কফোর্সের নির্বাহী কমিটির ‘প্রধান পরামর্শক’ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ৫ জুলাই চুক্তিতে চাকরির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয় পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগসহ সরকারপন্থি হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তারা ব্যাপক আতঙ্কে আছেন। আবার অনেকেই তাদের চাকরি ‘ভাগ্যের’ ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
প্রশাসনে চুক্তিতে যারা: মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (সিনিয়র সচিব) মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শেখ ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) লোকমান হোসেন মিয়া, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আব্দুস সালাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) মো. আখতার হোসেন, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার।
এ ছাড়া জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (সচিব) শাহাবুদ্দিন আহমদ, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, ইরাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (সচিব) মো. ফজলুল বারী, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক (লিয়েনে কর্মরত) বেগম শরিফা খান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম ওয়াহিদা আক্তার এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিআইডিএ) নির্বাহী সদস্য (সচিব) মো. খাইরুল ইসলাম এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।
এদিকে আগামী অক্টোবরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করলে তিনি অক্টোবর পর্যন্ত সময় পাবেন না। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াও আর থাকতে পারছেন না।