বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি দেশকে শক্তিশালী করতে হলে প্রাইমারি শিক্ষার প্রতি জোর দিতে হবে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। শিশুদের আদব-কায়দা শেখাতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে বরাদ্দে দালাল-কোঠা নির্মাণ কমিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের সমাজে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করতে হবে।
সোমবার বিকালে ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলের তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়াল বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দুর্নীতি সামাজিকভাবে কমিয়ে আনতে হলে প্রাইমারি লেভেল থেকে তা করতে হবে। তারা যদি বাচ্চাদের শেখায় দুর্নীতি খারাপ, ভালো নয়, তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর, তাহলে তা কমিয়ে আনতে অন্তত পাঁচ থেকে ১০ বছর লাগবে।
এ সময় নানা কারণেই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনেক কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, আগামী দিনে যে নির্বাচন আসছে সেটি এত সহজ নয়। আমার ৩০-৩৫ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় সে নির্বাচন অনেক কঠিন হবে। মানুষের চিন্তাধারার পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যদি কোনো ভুল করেও থাকি তাহলে নিজেদের সংশোধন করতে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। অনেক নেতাকর্মী মনে করছেন, আমরা এখনি ক্ষমতায় চলে গেছি, কিন্তু তা নয়। ক্ষমতায় যেতে হলে জনসমর্থন প্রয়োজন। জনগণের সমর্থন আমাদের আদায় করতে হবে। জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে। তাদের আস্থা ধরে রাখতে হবে। নেতাদের চালচলনে মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে বলেই ৩১ দফা দিয়েছে। আমরা সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই ৩১ দফা দিয়েছি। তা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে নেতাকর্মীরা কাজ করবেন। জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ের মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে হবে।
আগামীতে কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি নিয়ে তারেক রহমান বলেন, আমাদের দেশে চাঁদাবাজি আছে। তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সিন্ডিকেট ভাঙতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মধ্যসত্ত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।
খালেদা জিয়ার সময়ে কৃষকদের পাঁচ হাজার টাকা ঋণ মওকুফ এবং ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, প্রত্যেক কৃষককে একটি করে কার্ড দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের সার, বীজ যেন তাদের কাছে পৌঁছায়। এক বিঘা জমি চাষ করতে যদি একজন কৃষককে ২০ হাজার টাকা সাপোর্ট দেওয়া যায় তাহলে তারা ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবে। এটা তাদের জন্য বড় পাওয়া হবে। প্রত্যেক পরিবারকে দেওয়া হবে ফ্যামেলি কার্ড, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদেরকে সার্পোট করার জন্য।
এর আগে সকাল ৯টায় দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঈসমাইল জবি উল্লাহ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, বিএনপির কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদ, সাবেক সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার রানু, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবীবা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ডা. মাহাদী আমিন।
কর্মশালাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহগণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী।
এ ছাড়া বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাবেক সংসদ সদস্য মনিরা সুলতানা মনি, মাহমুদুল হাসান রুবেল, ডা. মাহাবুবুর রহমান লিটন, লাইলী বেগম, ড. শামছুজ্জামান মেহেদী, আরিফা জেসমিন।