সময় টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে অপসারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন আহমেদ জোবায়ের। বুধবার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এ রিট দায়ের করেন। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
এর আগে ১০ আগস্ট সময় টিভির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সময় টেলিভিশনের এমডি ও সিইও পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার স্থলে এসেছেন শম্পা রহমান। ওই দিন গুলশানের সিটি হাউজে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় নতুন এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক নির্ধারণ করা হয় বলেও জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার গুলশানের সিটি হাউসে সময় মিডিয়া লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সময় টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে আহমেদ জোবায়েরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, একই সভায় পরিচালক মিসেস শম্পা রহমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। সময় মিডিয়া লিমিটেডের সব কার্যক্রম এখন থেকে নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশনায় পরিচালিত হবে।
তবে এরপরই সময় টেলিভিশন থেকে জানানো হয়, অবৈধ বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে সময় টেলিভিশনের এমডি ও সিইওকে অপসারণের খবর ছড়াচ্ছে একটি মহল। যা আদৌ সত্য নয়। সময় টেলিভিশনের লাইসেন্স বর্তমান এমডির নামে। সুতরাং তাকে অপসারণ করার সুযোগ নেই।
এদিকে মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার উষ্কানিদাতা ও স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত গণমাধ্যম নিশ্চিতে সময় টিভির এমডি ও সিইও আহমেদ জোবায়েরের পদত্যাগসহ কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীসহ সময়ের সাবেক ও বর্তমান সাংবাদিকরা। ওইদিন দুপুর ১২টায় টেলিভিশনটির সামনে এক মানববন্ধন থেকে এই হুঁশিয়ারি দেন তারা। মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী অংশ নেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীরা বলেন, স্বৈরাচারী সরকারের পতনের আগে দেশব্যাপী হত্যাকাণ্ড চালায় শেখ হাসিনা। এসব হত্যাকাণ্ডের নীরব সমর্থন দেয় বেসরকারি টেলিভিশন সময় টিভি। এতে ক্ষোভের দানা বাঁধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্র হত্যার নিউজ প্রচার না করে উল্টো পুলিশকে ছাত্রদের বুকে গুলি চালাতে উস্কে দেয় দালাল সাংবাদিকরা। যার ভিডিও প্রকাশ হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা মহিউদ্দিন রনি বলেন, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। অথচ স্বৈরাচারের দোসররা রয়ে গেছে কিছু কিছু জায়গায়। আজ আমরা এসেছি সময় টেলিভিশনে। সময় টিভির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা গণহত্যায় উস্কে দেয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বিশেষকরে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এডভোকেট কামরুল ইসলাম ভাগিনা আহমেদ জোবায়েরের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
রনি বলেন, ছাত্রদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক নিউজ করে দেশের পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। এছাড়া ছাত্র জনতা হত্যায় মিথ্যা সংবাদ করে পুলিশকে উস্কে দেয়। ফলে গণহত্যায় সরাসরি দায়ী এ আহমেদ জোবায়েরসহ টেলিভিশনটির কর্তৃপক্ষ। এ শিক্ষার্থী বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আহমেদ জোবায়েরকে টেলিভিশনের চাকরি থেকে অব্যবহিত দিতে হবে।