শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে আলোচনার ফল ইতিবাচক না হওয়ায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলন দশম দিনের মতো চলছে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, তারা আজ বৃহস্পতিবারও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আগের দিনগুলোর মতোই অবস্থান নিয়েছেন কর্মসূচি পালনকারী শিক্ষকরা। আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আজকের জমায়েত আরো বড়। সারা দেশ থেকে নৌ ও সড়ক পথে আরো অনেক শিক্ষক কর্মসূচি জোরদার করতে আসছেন।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়া অবস্থান কর্মসূচি পালনকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও সাক্ষাৎ চান। প্রধানমন্ত্রী যা বলবেন সেটা মেনে নিয়েই তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন, যোগ করেন শিক্ষক নেতারা।
গতকাল বুধবার রাজধানীতে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী শিক্ষকদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈঠক করেন।
বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ সম্ভব নয়, তবে এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া হবে।
এ সময় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ নিয়ে দুটি কমিটি করার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। এগুলোর একটি সরকারিকরণের যৌক্তিকতা যাচাই করবে। অপরটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আর ও সরকারিকরণ হলে কতো ব্যয় হবে তার হিসেব করবে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার সরকারের কাছ থেকে আন্দোলন করে কিছু আদায় করে নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যখন যেটা প্রয়োজন পড়ে, প্রধানমন্ত্রী নিজেই সেটা দিয়ে দেন।
প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। আন্দোলনের চতুর্থ দিনে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানো কর্মসূচি ঘোষণা করেন। গত রোববার থেকে ওই কর্মসূচি শুরু হয়। গত সোমবার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। পরদিন মঙ্গলবার শিক্ষকদের ডেকে বৈঠক করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তখন শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিতের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
কিন্তু, রাতে বৈঠক করে শিক্ষকরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। গতকাল বুধবার শিক্ষকদের ডাকেন শিক্ষামন্ত্রী। তাদের নিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বৈঠকে বসেন তিনি। এ সময় সেখানে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নামে একটি সংগঠনের নেতারা ছিলেন। তাদের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আখ্যা দিলে উত্তেজনা তৈরি হয়। তখন শিক্ষামন্ত্রী সামাল দিয়ে বলেন, এখানে সবাই শিক্ষক।