কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পরিবার নিয়ে স্কুলের তিনটি কক্ষে রাত্রিযাপন শুরু করেছেন তেজগাঁও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসা. রেবেকা সুলতানা। শুধু তাই নয়। স্কুলের কয়েকজন জামাতপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট স্কুল ক্যাম্পাসে অবৈধ কোচিং, নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ভাড়া দেয়াসহ বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছেন মর্মে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া ট্রান্সফার সার্টিফিকেট চাওয়া ছাত্রীদের কাছে পুরো বছরের সেশন চার্জ বাবদ এক হাজার পাঁচশ টাকা আদায় করার অভিযোগ রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে।
স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাকে জানান, রেবেকার অবৈধ রাত্রিবাসের বিরুদ্ধে দেয়া লিখিত অভিযোগ নিয়ে তারা কথা বলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুকের সাথে। ছাত্রীদের স্কুলে ক্যামেরা হাতে অপরিচিত লোকদের আনাগোনা, স্কুলের ৫ তলা ভবনের ৫ তলার তিনটি কক্ষ স্কুলের খরচে সুসজ্জিতকরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এ খবর পেয়ে রেবেকা ব্যাকডেটে মহাপরিচালকের কাছে একটি আবেদন করেন। আবেদনে তিনি স্কুলের দুটি কক্ষে থাকার অনুমতি প্রার্থনা করেন। কিন্তু আজ ৩ জানুয়ারি এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রেবেকাকে স্কুল ক্যাম্পাসেই রাত্রিবাসের অনুমতি দেয়া হয়নি। বাস্তবে তিনি গত কয়েকমাস যাবত স্কুলেই থাকছেন।
হাবিবুর রহমান নামের একজন অভিভাবক বলেন, মহাপরিচালকও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা এবং রেবেকাও একই ক্যাডারের। আমরা এ তথ্য জানতে পেরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি। ঢাকার আঞ্চলিক উপপরিচালক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি স্কুলেরর শিক্ষক মো: সাখায়েত হোসেন বিশ্বাসকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাখায়েত ২৩ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন মহাপরিচালকের কাছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওই তদন্ত প্রতিবেদন চাপা পড়ে রয়েছে।
ঢাকার কয়েকটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পলাতক আসামী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুকের আমলে শিক্ষা ভবনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দাপটের সঙ্গে ছিলেন এই রেবেকা। তেজগাঁও বালিকা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনে ও রাতে ক্যামেরা হাতে কয়েকটি ছেলেকে দেখা যায়। এটা অশনি সংকেত হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান শিক্ষকরা। রেবেকাকে সর্বাত্বক সহায়তা করেন সরকারি হাইস্কুল প্রধান শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রক সৈয়দ হাফিজুল ইসলাম ও মোস্তফা কামাল গং।
রেবেকার বিষয়ে মতামতের জন্য মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. মো: আবদুল মান্নান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, অনুমতি ছাড়াই স্কুল ক্যাম্পাসে রাত্রিযাপন করা নিয়ে রেবেকার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।